আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার সরকার জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় অপ্রয়োজনীয় বা ব্যক্তিগত যানবাহনে জ্বালানি বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। বিবিসি জানায়, দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে নতুনভাবে জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না দেশটির সরকার। এ কারণে আগামী দুই সপ্তাহ শুধুমাত্র বাস, ট্রেন, এবং চিকিৎসা ও খাদ্য পরিবহনের সঙ্গে জড়িত যানবাহনে জ্বালানি বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শহরের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, দেশটির কর্মকর্তাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার দেশটির সরকার জানিয়েছিল, আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত ব্যক্তিগত পরিবহনে জ্বালানি বিক্রি বন্ধের বিষয়ে তারা পরিকল্পনা করছেন। তারপরই ব্যক্তিগত পরিবহনে জ্বালানি বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকারের মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, দেশটির ইতিহাসে এরকম ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হননি তারা। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সামনের দিনগুলোর জন্য মাত্র নয় হাজার টন ডিজেল ও ছয় হাজার টন পেট্রোল মজুত রয়েছে। ব্যক্তিগত পরিবহনসহ বর্তমানে যেভাবে ডিজেল ও পেট্রোল বিক্রি করা হচ্ছে, সেভাবে ডিজেল ও পেট্রোল বিক্রি হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের মজুত শেষ হয়ে যাবে। গত রবিবার দেশটির একজন মন্ত্রী জানান, তারা জ্বালানি আমদানির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু কবে নাগাদ নতুন জ্বালানির আমদানি সম্ভব হবে তা নিশ্চিত নয়। খাদ্য সংকট তৈরির শঙ্কায় কৃষকদের আরও বেশি ধান উৎপাদনের আহ্বান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এমনকি অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনে সরকারি কর্মকর্তাদের সপ্তাহে একদিন অতিরিক্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিবিসিকে অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের একজন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অ্যালেস্ক হোমস বলেন, ব্যক্তিগত পরিবহনে জ্বালানি বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের একটি ছোট চিহ্ন। চলতি মাসের শুরুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী ছয় মাসের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য যেমন খাবার, জ্বালানি এবং সারের চাহিদা মেটাতে তাদের অন্তত ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাহায্য প্রয়োজন। শ্রীলঙ্কা প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য আমদানিতে ভারত ও চীনসহ মিত্রদেশগুলোর নিকট সাহায্যের আবেদন করেছে।
Discussion about this post