ঢাকা: জনগণ রাস্তায় নামলে সরকার টিকে থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, জনগণ যখন কোনো ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন করার জন্য রাস্তায় নামে তখন কোনো শক্তিতেই তারা টিকে থাকতে পারে না। পেছনে তাদের (সরকারের) শক্তি যতই থাকুক কিন্তু সেই শক্তি তাদের টিকিয়ে রাখতে পারে না। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবি রিজভী ও ঢাকা জেলার বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা জেলা বিএনপি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। গয়েশ্বর বলেন, আজকে অর্থনীতি দুর্নীতির কাছে হারিয়ে গিয়েছে। রাজকোষ খালি, বেতন দেওয়ার টাকাও থাকবে না। এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পকেটমারা ছাড়া রাজস্ব কর্মকর্তাদের আর কোনো কাজ নেই। এ পর্যন্ত ১৭টি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প তাদের কাজ স্থগিত রেখেছে, অর্থ জোগান দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু যে টাকাগুলো খরচ হয়েছে সে টাকাগুলো আসবে কোথা থেকে? তিনি বলেন, অর্থনৈতিক যে অবস্থা এতে করে শেখ হাসিনার যদি ন্যূনতম মস্তিষ্ক ঠিক থাকতো তাহলে সে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছেড়ে দিত। কারণ এই অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় তার পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন। এরপরে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে তাদের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। এই যে টাকাগুলো চলে গেল এই টাকা উদ্ধার করা, যারা টাকাগুলো লুট করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি কাজ। এই অবস্থার মধ্যে আজকে দেশটা অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, অনেকেই গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি করছেন। আমি বলব তাদের মুক্তির দাবি নয়, তাদেরকে মুক্ত করব। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, এছাড়া কারাগারে যে সব নেতাকর্মী রয়েছেন তাদেরকেও মুক্ত করব। নাম না জানা, অজানা অসংখ্য নেতাকর্মী আটক রয়েছেন তাদেরকেও মুক্ত করব। আদালতের আচরণ আর গরিবের আচরণের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই দাবি করে তিনি বলেন, কারণ সরকার সব আদালতকে আয়ত্ত করেছে, এমনভাবে আয়ত্ত করা হয়েছে অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয় আদালত সেটাই করে। আদালত তার নিজস্ব বিচার, বিবেক, বুদ্ধি এবং আইনকে অনুসরণ করতে ভয় পায়। যারা ভয় পায় তাদের কাছে বিচার দিয়ে লাভ নেই, কারণ সঠিক বিচার করার ন্যূনতম ক্ষমতা তাদের নেই। গয়েশ্বর বলেন, আজকে অন্যায়ভাবে বন্দি আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অসংখ্য মামলায় আজকে বিচার পাচ্ছেন না। অবিচারের মধ্য দিয়ে তারা নির্যাতিত হচ্ছে। এই সরকার একটি লুটেরা সরকার, ফ্যাসিবাদী সরকার, জনগণের পকেটমারা সরকার। অর্থাৎ জনগণের পকেট যদি না মারতো তাহলে ১০ লাখ কোটি টাকা কি করে পাচার হলো? কী করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে যায়? কীভাবে শেয়ার বাজারের টাকা উধাও হয়ে যায়? কী করে লাগামহীনভাবে দুর্নীতি হয়? মানববন্ধনে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বেনজীর আহমেদ টিটু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Discussion about this post