স্টাফ রিপোর্টার(খুলনা): খুলনার তেরখাদায় বাবা-ছেলে হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলামসহ ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- তেরোখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম দ্বীন ইসলাম (৫৪), মো. আব্দুর রহমান (৫৫), জমির শেখ (২৫), শেখ সাইফুল ইসলাম (৩৫), খালিদ শেখ (৩২), এস্কেন্দার শেখ (৪২), জসিম শেখ (৩৫), হোসেন শেখ (৩০), জিয়ারুল শেখ (২৬), বাহারুল শেখ (২৪), আব্বাস শেখ (২৪), অহিদুল গাজী (৩৪), খাইরুল শেখ (৩৫), কেরামত মল্লিক (৩৫), মাহবুর শেখ (৪৯), বাবু শেখ (৩৫) ও নুর ইসলাম শেখ (৩৭)। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট রাতে তেরখাদা উপজেলার পহরডাঙ্গা গ্রামের পিরু শেখ ও তার পরিবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সিঁদ কেটে ভিকটিমের ঘরের ভেতর প্রবেশ করেন এবং অন্যান্য সদস্যদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দেন। এ সময় আসামি আব্দুর রহমান হুকুম দিয়ে বলেন পিরুকে কুপিয়ে শেষ করে দে। ওর জন্য আমি চাকরি হারিয়েছি। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আসামি সাইফুল হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে পিরুর মাথায় কোপ দেন। পরে অন্যান্য আসামিরা পিরুকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ভিকটিম ও তার স্ত্রী চিৎকার করতে থাকলে পাশের ঘর থেকে ছেলে নাইম বাবাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এলে তাকে টেনে হেঁচড়ে আসামিরা উঠানে নিয়ে যান। আসামি খালিদ শেখ ফলাযুক্ত ফুলকুচি দিয়ে নাইমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দেন। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকলে আসামি হাবিবুর ও জিয়ারুল চাপাতি দিয়ে নাইমের কণুই ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ঘটনাস্থলে নাইমের মৃত্যু হয়। আসামিরা চলে যাওয়ার পর পিরু শেখকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পিরু মারা যান। এ ব্যাপারে নিহত পিরুর স্ত্রী ঘটনার দু’দিন পর তেরখাদা থানায় স্বামী ও সন্তান হত্যার অভিযোগে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
Discussion about this post