রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী নগরীর একটি মিষ্টির দোকানের কর্মচারী প্রকাশ শিং (১৯) হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের আরও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আজ রবিবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত প্রকাশের চাচা তানোর উপজেলার এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের বাসিন্দা বিমল সিং (৫০), তার স্ত্রী অঞ্জলী রাণী (৩৫), চাচাতো ভাই সুবোধ সিং (১৮) এবং অঞ্জলী রাণীর পরকীয়া প্রেমিক নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার সাদাপুর খরিবাড়ি এলাকার বাদল মন্ডল (৪৫)। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল রাতে প্রকাশ সিং তানোরের কলমা ইউনিয়নের এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের নির্জন রাস্তায় খুন হন। পরের দিন সকালে তার গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত প্রকাশ ওই গ্রামের নির্মল সিংয়ের ছেলে। রাজশাহী নগরীর মিষ্টি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নবরূপের কর্মী ছিলেন প্রকাশ। লকডাউনে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। এ ঘটনায় ২৯ এপ্রিল সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা নির্মল সিং। পরে মামলার প্রধান আসামিসহ খুনের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেন- বিমল সিংয়ের স্ত্রী অঞ্জলী রাণীর সঙ্গে তিন বছর ধরে পরকীয়া চলছিল পার্শ্ববর্তী নিয়ামতপুর উপজেলার সাদাপুর খড়িবাড়ি এলাকার রাজমিস্ত্রি বাদল মন্ডলের। স্বামীর অবর্তমানে প্রায় বাদলের সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হতেন অঞ্জলী। তবে লকডাউনে বাড়িতে অবস্থানকালীন প্রকাশ চাচির পরকীয়ার বিষয়টি জেনে যায়। জানাজানির শঙ্কায় চাচি অঞ্জলী ও তার পরকীয়া প্রেমিক বাদল প্রকাশকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। অঞ্জলী এই পরিকল্পনায় যুক্ত করেন স্বামী ও বড় ছেলেকে। এরপর ২৮ এপ্রিল দিনগত রাতে কৌশলে বিমল ও তার ছেলে সুবোধ প্রকাশকে এনায়েতপুর চোরখৈর ফসলি মাঠের নির্জন রাস্তার ধারে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন বাদল ও অঞ্জলী। পরে চারজন প্রকাশকে গলা কেটে হত্যা করে। আদালতে আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে রবিবার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
Discussion about this post