ঢাকা: ইভ্যালিসহ দেশের ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে আলাদাভাবে নিরীক্ষা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ওই চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্য ৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ধামাকা, ই–অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, কিউকুম, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিড ডটকম ডটবিডি ও আলেশা মার্ট। গত ২৪ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালি ছাড়া অন্য ৯ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক লেনদেন ও আর্থিক তথ্য জানতে চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠিয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এই চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে উল্লেখিত ৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা, ক্রেতা ও মার্চেন্টদের কাছে মোট দায়ের পরিমাণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর চলতি ও স্থায়ী মূলধনের পরিমাণ জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিয়ে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। আর আমরা যে চিঠি দিয়েছিলাম, তার জবাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক দিক বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন করছে বলে জানিয়েছে।’ এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য আরেকটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালির ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা আর তাদের চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি টাকার পরিমাণ উঠে আসে। এদিকে গত মাসে ই–অরেঞ্জের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য সরবরাহ বা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে মামলা হয়েছে। এ মামলার আসামিদের মধ্যে ই–অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়া এ মামলার অন্য আসামি ই–অরেঞ্জের আরেক মালিক বীথি আকতার ওরফে নাজনীন নাহার ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। বীথি আক্তার বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানার স্ত্রী ও সোনিয়া মেহজাবিন তার আপন বোন। ভিন্ন এক মামলায় শেখ সোহেল রানাও আসামি। তিনি কয়েকদিন আগে পালাতে গিয়ে ভারতে গ্রেপ্তার হন। জানা গেছে, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তিন দফায় সম্পত্তি, দায়, দেনা ইত্যাদির বিবরণ জমা দিয়েছে ইভ্যালি। এগুলোর সত্যতা যাচাই ও পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে একটি বৈঠক ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে, সাত কোটি টাকা পাওনার অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইভ্যালিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে পণ্য ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান পেপারফ্লাই। ইভ্যালির নানা পণ্য বিভিন্ন জায়গায় ডেলিভারি দিয়ে আসছিল পেপারফ্লাই। তবে গত সাত মাস ধরে তারা এর জন্য কোনো টাকা পাচ্ছিল না। নোটিশে বলা হয়, পাওনা টাকা আদায় করার জন্য পেপারফ্লাই নানাভাবে চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া দিচ্ছিল না ইভ্যালি। এ কারণেই পাওনা টাকা ফিরে পেতে তারা ইভ্যালিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।
Discussion about this post