চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের কাছে সারবোঝাই এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খা চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট শরীফ মাহমুদ সায়েম সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। এর আগে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। র্যাব-১১ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে হাইমচর থানায় মামলা ‘অজ্ঞাত ডাকাত দলকে’ আসামি করে মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মোর্শেদ। ওই মামলার এজাহারে জাহাজ মালিক নবম ব্যক্তি হিসেবে ঠিকানাবিহীন জনৈক ইরফান নামের ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেন। এজাহারে জাহাজ মালিক উল্লেখ করেন, আহত জুয়েল তার সঙ্গে থাকা ৯ জনের মধ্যে ইরফান ছিল বলে হাতে লিখে জানান। সে সুস্থ হলে ডাকাতদের দেখলে চিনবে বলে ইশারায় জানিয়েছেন। মামলার বাদি এজাহারে জাহাজে থাকা সাত জন খুন ও এক আহতের কথা উল্লেখ করেন। খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন- সুকানি জুয়েল (২৮)। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সেকান্দর প্রকাশ সেকেন্ড খালাসীর ছেলে। ঘটনার পর পুলিশ ওই জাহাজ পরিদর্শনকালে একটি রক্তাক্ত চাইনিজ কুড়াল, একটি ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, একটি মানিব্যাগ, নগদ ৮ হাজার টাকা, একটি বাংলা খাতা, একটি সিল, একটি হেডফোন, এক মুঠো ভাত ও এক টেবিল চা চামচ তরকারি জব্দ করে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। নৌ পুলিশ জানিয়েছে, আহত জুয়েল বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাইমচর থানার ওসি মহিউদ্দিন সুমন বলেন, রাতে ৩৯৬/৩৯৭ ধারায় মামলাটি করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মোর্শেদ। মামলা নম্বর (১৭/১৬৬) মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া দাফন সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসন ২০ হাজার এবং নৌ পুলিশ ১০ হাজার টাকার সহায়তা দেয়। নিহতদের মধ্যে দুজনের বাড়ি ফরিদপুর, দুজনের নড়াইল, দুজনের মাগুরা এবং একজনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানার জেটি থেকে ইউরিয়া সার নিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। জাহাজে ৯ জন স্টাফ ছিলেন। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে হাইমচর উপজেলার ঈশানবালা খালের মুখে জাহাজটি দেখতে পান এমভি মুগনির মাষ্টার বাচ্চু মিয়া। সেখানে তিনি জাহাজের সাতজনকে মৃত অবস্থায় এবং একজনকে অর্ধমৃত অবস্থায় পান।
Discussion about this post