আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা দীর্ঘ ১৫ বছর স্বেচ্ছা-নির্বাসনের পর দেশে ফিরেছেন। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে তিনি পা রাখেন এবং এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের স্বেচ্ছা-নির্বাসনের অবসান হলো। এদিকে থাকসিন এমন এক সময়ে ফিরে এলেন যখন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে সংক্রান্ত ভোটাভুটি মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সফল এই নির্বাচিত নেতাকে দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণশীল রাজকীয়রা ভয় পেয়ে আসছে। থাকসিনকে দুর্বল করার জন্য সামরিক অভ্যুত্থান এবং বিতর্কিত আদালতের মামলাগুলোকে তারাই মূলত সমর্থন যুগিয়ে এসেছে। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এই পরিস্থিতিতে থাকসিনের দেশে প্রত্যাবর্তনে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। যদিও তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় ১০ বছর পর্যন্ত সাজা রয়েছে। বিবিসি বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই থেকে একটি প্রাইভেট জেটে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় রাজধানী ব্যাংককে অবতরণ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এ সময় তার শত শত উচ্ছ্বসিত সমর্থক উল্লাস, বক্তৃতা এবং গান করছিলেন। এছাড়া থাকসিনের প্রত্যাবর্তনের এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে তার দলের শক্ত ঘাঁটি থেকে অনেকেই রাতারাতি ব্যাংককে চলে আসেন। কিন্তু থাকসিন তাদের শুভেচ্ছা জানাতে পারেননি। দুই মেয়ে এবং ছেলেকে পাশে নিয়ে তিনি বিমানবন্দর টার্মিনাল থেকে অল্প সময়ের জন্য বের হন এবং রাজা ও রানির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশে ফেরার পর থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মূলত তার অনুপস্থিতিতে দেওয়া কারাদণ্ডের বিষয়ে কী করা হবে তা সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি দীর্ঘ দিন কারা হেফাজতে থাকবেন এমনটা কেউ আশা করছে না। উল্লেখ্য, ৭৪ বছর বয়সী থাকসিন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং দুই বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। এরপর ‘দুর্নীতির’ দায়ে দায়েকৃত মামলায় কারাগারে যাওয়া এড়াতে থাকসিন দেশত্যাগ করেন। আর এরপর থেকেই দেশের বাইরে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন এই থাই নেতা। অবশ্য নিজের অনুপস্থিতিতে একাধিক ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন থাকসিন। তবে এসব মামলা এবং তার বিরুদ্ধে ঘোষিত কারাদণ্ডের সাজাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
Discussion about this post