ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই বছর ২০-২২টা দেশে নির্বাচন। অথচ ইউরোপ-আমেরিকার প্রতিনিধিরা ঘুরে ঘুরে শুধু বাংলাদেশে আসছেন। তাদের আমরা তো দাওয়াত করি না। ইউরোপ-আমেরিকার মেহমান না বলে চলে আসেন। আসতে চান আমাদের বলেন, আমরা আদর যত্ন করে রাখব। প্রয়োজনে আমাদের জনগণের সঙ্গে কথা বলুন। আপনারা কথা বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেন, ধমক দেন, এখন আবার ভিসানীতি দেন। কিন্তু এই হুমকি তো বিএনপিকে দেন না। ওখানে কি ভিসানীতি নেই? শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আয়োজনে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের স্মরণে’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের তো মূল কথা, নির্বাচনে যে বাধা দেবে তার বিরুদ্ধে ভিসানীতি। এই কাজ তো বিএনপি করছে। আমরা তো করছি না! আমরা তো নির্বাচনের আগে-পরে শান্তি চাই। যারা নির্বাচনের নামে আগুন সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করবে, আমরাও দেখব এই নিষেধাজ্ঞার মানে কী, এই ভিসানীতি কার বিরুদ্ধে প্রয়োগ হবে। সত্য কথা বলাই শেখ হাসিনার বড় দোষ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্টের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বড় বড় সত্য ফাঁস করে দিয়েছেন। তিনি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। আমরা অনেকে ভয় করি, নেত্রী কেন এসব বলেন। বিশ্ব মোড়লদের ক্ষেপাচ্ছেন। কিন্তু নেত্রীর কাছে সব খবর আছে। এখানে একটা বড় খেলা আছে। অন্য দেশের গণতন্ত্র নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারেক রহমানকে বলেন, সাহস থাকলে দেশে আসতে। রাজপথে ফয়সালা হোক। আদালতের রায় আছে তার বক্তৃতা অনলাইন-অফলাইনে কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। প্রতিদিনই তিনি এগুলো করে যাচ্ছেন, এর কি কোনো বিচার নেই? ইউরোপ-আমেরিকার গণতন্ত্রের নেতারা এই ফ্যাসিস্টের তৎপরতা দেখেন না। তারেকের বিষয় দেখেন না? বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিদেশেও চিহ্নিত। কানাডার আদালত বিএনপিকে পাঁচবার সন্ত্রাসী বলেছে। এই টেরোরিস্টদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ। কাদের আরও বলেন, তারা এখন বলে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র। এটার পুরো চরিত্রই বিএনপির ক্ষমতার আমলকে ফুটিয়ে তোলে। ফ্যাসিবাদের জ্বলন্ত প্রমাণ বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আজকে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টানা ১৫ বছর চলে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বল্পোন্নত দেশ উন্নয়নশীল মর্যাদা পেতে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশের অর্জন পুরো বিশ্বে বিস্ময়। এটাই শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অপরাধ। তিনি আরও বলেন, তোমরা (বিএনপি) গণতন্ত্র ধ্বংস করেছ, কোটি কোটি অর্থ পাচার করেছ, হাওয়া ভবন করে লুটপাট করছ। দুর্নীতির কথা তোমাদের মুখে শোভা পায় না, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বিএনপি। তারাই এ দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, ভোট চুরির রাজনীতি শুরু করেছে, ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করেছে। তাদের মুখে এখন গণতন্ত্রের সুবচন শুনতে হবে? গণতন্ত্র ধ্বংস করে গণতন্ত্রের কথা বলে। দুর্নীতিতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে তারা দুর্নীতির কথা বলে। ঠাকুর ঘরে কে রে? ফখরুলের অবস্থা হয়েছে এখন তাই। কয়েকদিন ধরে দেখেছি, কান্নায় বুক ভেসে যায়। সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির কর্মীরা হতাশ ছিল গ্রামে গ্রামে, তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়ে প্রতি সমাবেশে আসতে বলেছে। কাঁথা-বালিশ, মশারি, লোটা-কম্বল নিয়ে আসতে বলেছে। ফখরুল বলেছে, অতিরিক্ত জামা-কাপড় লাগবে। মনে মনে স্বপ্ন ছিল পল্টনে বসেই যাবে। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসনে দেখা না দিলে তারা উঠবে না। ফখরুল সাহেব, তত্ত্বাবধায়ক চাইলে পাকিস্তানে যান। দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই।
Discussion about this post