স্টাফ রিপোর্টার(রংপুর): রংপুরে সড়ক-মহাসড়কে হয়রানি ও অবৈধ যানবাহনের চলাচল বন্ধের দাবিতে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এ ধর্মঘট। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের দুদিন আগে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে জেলা মোটর মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি এ কে এম মোজাম্মেল হক জানান, মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের মহাসড়কগুলোতে এখনও নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এজন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য কয়েকটি সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সব রুটে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। তিনি বলেন, মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছি। এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুধবার সন্ধ্যায় মোটর মালিক সমিতি, ট্রাক মালিক সমিতি, কার-মাইক্রোবাস মালিক সমিতি ও সাধারণ পরিবহন মালিকদের বৈঠকে ধর্মঘটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে থ্রি হুইলার, নসিমন, করিমনসহ লাইসেন্সবিহীন ও অন্যান্য অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা এবং রংপুর-কুড়িগ্রাম রুটে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার বাস, মিনিবাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ থাকবে। ধর্মঘটের ডাক আসতে পারে এমন আশঙ্কায় বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা আগাম আসতে শুরু করেছেন। যেকোনো উপায়ে গণসমাবেশ সফল করতে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ উপায়ে মাঠে অবস্থান করছেন। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ এবং ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি। এর ধারাবাহিকতায় ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ গণসমাবেশের ঘোষণা রয়েছে তাদের। রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে আমরা প্রস্তুত। এজন্য গত ৬ অক্টোবর থেকে রংপুর বিভাগের সব জেলা ও উপজেলায় আমরা বৈঠক করেছি, সভা করেছি। সরকার ধর্মঘটসহ কোনো বাধা দিয়েই গণসমাবেশে গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না। আমরা সমাবেশ সফল করব, আমাদের নেতাকর্মী সমর্থক সবাই এখন ২৯ অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে আছেন। রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, আমরা আশঙ্কা করছিলাম, সরকারের পক্ষ থেকে বাধা আসতে পারে। কারণ এর আগেও সেটা হয়েছে। এ কারণে সমাবেশের দুদিন আগ থেকেই নেতাকর্মীরা রংপুরে আসতে শুরু করেছেন। প্রয়োজনে হেঁটে, বাইসাইকেলে কিংবা ভ্যানে করে হলেও সমাবেশে এসে যোগ দেবেন তারা। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন বলেন, আমরা বিএনপির সমাবেশে কোনো বাধা দিচ্ছি না। আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক এই সমাবেশকে ঘিরে অন্য কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমরা কঠোর হস্তে সেটি দমন করব। আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
Discussion about this post