মাদারীপুর প্রতিনিধি: অপহরণ শেষে হত্যা মামলায় ২০ বছর পর মাদারীপুরে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লা তুল ফেরদৌস এই রায় দেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও বাদী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার দাবি করেছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের আমগ্রামের চৈতন্য বৈদ্যের ছেলে তরুনী বৈদ্য, অশোক বৈদ্য, একই গ্রামের পদ বিশ্বাসের ছেলে কালু বিশ্বাস, নিতাই বৈরাগীর ছেলে নরেন বৈরাগী ও কদমবাড়ী ইউনিয়নের বিজয় বেপারী। এর মধ্যে বিজয় বেপারী পলাতক রয়েছে। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৪ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে পূজা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রামের গুরুপদ বৈদ্যের স্ত্রী রাধা রানী বৈদ্য ও তার দুই সন্তান। এরা আমগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকায় এলে জমিজমা বিরোধের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের উপর হামলা চালিয়ে রাধা রানী বৈদ্যকে ধরে নিয়ে যায় এবং দুই সন্তানকে বেদম মারপিট করে। মারপিটের পরের দিন ১৫ অক্টোবর রাজৈর থানায় রাধা রানী বৈদ্যের ছেলে বিষ্ণুপদ বৈদ্য বাদী হয়ে তরুণী বৈদ্য, অশোক বৈদ্যসহ ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করে। মামলার আসামি অশোক বৈদ্যকে গ্রেপ্তার করলে তার দেয়া স্বীকারোক্তিতে অপহরণের ১১ দিন পরে রাধা রাণী বৈদ্যের লাশ পাখুল্লার একটি বিল থেকে উদ্ধার করে। পরে মামলাটি অপহরণ শেষে হত্যার দিকে মোড় নেয়। মাদারীপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মামলাটি দীর্ঘ দিন হলেও আদালত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায়ের সময়ে আদালতে চার আসামি উপস্থিত ছিলেন এবং একজন পলাতক রয়েছেন। রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করছি।’ মামলার বাদী বিষ্ণুপদ বৈদ্য বলেন, ‘আমার মাকে নির্মমভাবে সামান্য ১০ শতাংশ জমির জন্য খুন করে। তখন আমি অল্প বয়সী ছিলাম। দীর্ঘ দিন পর হলেও মামলার রায় পেয়ে আমরা সন্তুষ্ট। আরও বেশি খুশি হবো যদি আসামিদের ফাঁসিতে ঝুঁলানো হয়। তাহলে আমার মায়ের আত্মা শান্তি পাবে। এদের কোনোভাবেই যেন ফাঁসি থেকে রক্ষা না হয়।’ তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী জাফর আলী মিয়া বলেন, ‘রায়ে আমার মক্কেলদের উপর ন্যায় বিচার করা হয়নি। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা রাখি, সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।’
Discussion about this post