ঢাকা: বাংলাদেশ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায়, কারও সঙ্গে বৈরিতা চায় না। তবে আঘাত এলে বাংলাদেশ প্রতিহত করবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কারও সঙ্গে যুদ্ধ নয়। তবে সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে চুপ করে বসে থাকবে না বাংলাদেশ। বুধবার সকালে সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে ঢাকা সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) কোর্স-২০২১-২২ সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণবভন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে। বাংলাদেশ কারো সঙ্গে বৈরী সম্পর্কে বিশ্বাস করে না। রোহিঙ্গাদের সাহায্য প্রদান করে তার উদাহরণ রেখেছে বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘একদিন বিদেশি বন্ধুরা আমাদের একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে আসবে। কেউ আঘাত দিলে আমরা চুপ থাকব না। সেটা নিশ্চয়ই আমরা প্রতিহত করব বা প্রতিবাদ করব।’ সেনাবাহিনীর সদস্যের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশেকে ভালো বাসতে হবে, দেশে জন্য নিবেদিত হতে হবে। মাথা উঁচু করে চলতে হবে। নিজেকে সেনাপরিবারের সদস্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমার দুই ভাই আর্মি অফিসার ছিল। ক্যাপ্টেন শেখ কামাল একজন উদ্যমী সৃজনশীল ও প্রাণবন্ত সেনা অফিসার ছিলেন। ঢাকা সেনানিবাসস্থ দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন শেখ জামাল। বক্তব্যে সেনা নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি তাগাদা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশ যেন তার সীমিত সম্পদ দিয়েই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে নয়, আমাদের যা সম্পদ আছে, তা দিয়েই আমরা নিজেদের বিশ্বে মর্যাদাশীল করে গড়ে তুলেছি এবং আরও গড়ে তুলব, সামনে এগিয়ে যাব।’ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কোর্সে আপনারা সামরিক জ্ঞান ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক উচ্চতর জ্ঞান লাভ করেছেন। এই জ্ঞান আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন ও যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। আমি চাই, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হবে। এ জন্য পদবি পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে অনেক কাজ করে দিয়েছি। যাতে প্রতিটি সদস্য সমানতালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলতে পারে। এ সেশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১৩২, পুলিশের তিন, আরও ১৮টি দেশের ৪৭ কর্মকর্তাসহ মোট ২৫১ কর্মকর্তা কোর্স সম্পন্ন করেছেন। যাদের মধ্যে ১৭ নারী কর্মকর্তাও আছেন। বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর মধ্যপর্যায়ের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের কমান্ডার ও স্টাফ হিসেবে দক্ষভাবে গড়ে তোলার জন্যই এ কোর্সের আয়োজন করা হয়।
Discussion about this post