নীলফামারী প্রতিনিধি: দুলাভাই কর্তৃক অপহরনের তিন মাস পর শ্যালিকা ইতির(১৯) লাশ পাওয়া গেল। আজ বুধবার(১৯ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় গোপনে ইতির লাশের দাফনের চেষ্টার সময় পুলিশ নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গ্রাম থেকে ইতির লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পালিয়ে যায় ইতির দুলাভাই সহীদ শাহ ও তার পরিবারের লোকজন। নিহত ইতি একই উপজেলার কিশোরীগঞ্জ ইউনিয়নের মুসা গ্রামের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। মেয়েটির দুলাভাই সহীদ শাহ উপজেলার পানিয়ালপুকুর গ্রামের জাকারিয়া শাহর ছেলে জয়পুরহাট জেলায় কর্মরত একটি ঔষধ কোম্পানীর ফিল্ড প্রতিনিধি। পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে স্মৃতি এর সাথে সহীদ শাহর বিয়ে হয়। তারা জয়পুরহাট জেলা শহরে থাকতো।তাদের একটি ৭ বছরের সৌধ্য নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে স্মৃতি সন্তানসহ বাবার বাড়ি ফিরে আসে। এ অবস্থায় গত ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারী সহীদ শাহ্ তার একমাত্র শ্যালিকা ইতিকে অপহরন করে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষে থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ ওই সময় অভিযান চালিয়ে ইতিকে উদ্ধার ও অপহরনকারী আসামী দুলাভাই সহীদ শাহকে(৩৬) গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরন করেছিল। ৬ মাস পর সহীদ শাহ জামিন পায়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সহীদ শাহ পুনরায় ইতিকে অপহরন করে গা-ঢাকা দেয়। এ ঘটনায় ইতির বাবা কিশোরীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছিল। কিন্তু পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ইতিকে উদ্ধার করতে পারেনি তেমনি আসামী সহীদ শাহকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে শাহরিয়ার সাগর নামের এক যুবক গতকাল মঙ্গলবার(১৮ জানুয়ারী) রাত ২টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মেয়ের লাশের ছবি সহ একটি স্ট্যাটাস দেয়। তাকে লিখা ছিল রংপুর মেডিকেলে একটি মেয়ের লাশ ফেলে সহীদ শাহ নামের একজন লোক পালিয়ে গেছে। মেয়েটির বাড়ি নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায়। ফেসবুকে ছবি দেখে অপহৃতা ইতির বাবা নিজের মেয়েকে চিনতে পারে ও রংপুর মেডিকেলে ছুটে যায়। কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ইতির বাবা জানান, বুধবার সকালে রংপুরে মেয়ের লাশ দেখতে না পেয়ে তিনি কিশোরীগঞ্জ থানায় আসেন। বুধবার বিকাল ৪টায় তিনি জানতে পারেন তার ছোট মেয়ের লাশ বড় মেয়ের জামাই সহীদ শাহ এর বাড়িতে এনে দাফনের চেস্টা চলছে। সেখানে তিনি পুলিশ সহ গেলে বাড়ির লোকজন লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল আউয়াল জানান, পূর্বের অপহরন মামলার সুত্র ধরে আমরা ইতির লাশ বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারীর জেলা মর্গে প্রেরন করেছি। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে মৃত্যুর কারন জানা যাবে। পাশাপাশি আসামীকে গ্রেফতারের চেস্টা করছি।
Discussion about this post