ঢাকা: র্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে র্যাব সদরদপ্তরে। সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সহকর্মীদের কাদিয়ে শেষ বিদায় নেন ইসমাইল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, নিহত ইসমাইলের পরিবারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও র্যাব সদস্যরা। এর আগে নিহত র্যাব সদস্যদের স্মৃতিতে নির্মিত ‘প্রেরণা ধারা’য় লে. কর্নেল ইসমাইলের কফিন রাখা হয়। সেখানে পুলিশপ্রধানসহ বাহিনীর সদস্যরা পুষ্প অর্পণ করেন। এসময় তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়। লে. কর্নেল ইসমাইলের নিথর দেহ বিদায় জানানোর সময় তার সহকর্মীরা অশ্রুসিক্ত হয়ে যান। এর আগে বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে ইসমাইলের মরদেহবাহী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে র্যাবপ্রধান নিহতের মরদেহ বুঝে নেন। মরদেহ পৌছার পরে রাতেই প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার নিজ এলাকা রাজধানীর কালশীর বাইতুর রহমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। এই শহীদ সেনা কর্মকর্তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন স্বজন ও স্থানীয়রা। এসময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ২৭ জুলাই ঢাকার নবাবগঞ্জে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেল-২০৬ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল। ‘জরুরি অবতরণ পদ্ধতি’ অনুশীলনের সময় হেলিকপ্টারটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে সেটি কৈলাইল ইউনিয়নের ভাঙ্গাভিটা এলাকায় একটি ধানখেতে জরুরি অবতরণ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। দুর্ঘটনায় তিনি মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান। হেলিকপ্টারে তার সহযোগী ছিলেন মেজর শামস। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। ৫ আগস্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইসমাইলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। পরদিন তার মেরুদণ্ডে সফল অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু শরীরে বিভিন্ন জটিলতার কারণে অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে ইসমাইল হোসেনের বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভদ্র, বিনয়ী, ধর্মানুরাগী এবং অত্যন্ত দক্ষ একজন পাইলট ছিলেন বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা। সেনাবাহিনীর কোর অব সিগন্যালস্-এর এই কর্মকর্তা চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি র্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
Discussion about this post