বিনোদন প্রতিবেদক : হলিউড চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ‘ওপেনহাইমার’ বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছে। একই সঙ্গে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একটি যৌনতার দৃশ্যে হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের একটি লাইন উল্লেখ করা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছবির ওই দৃশ্যটিকে আপত্তিকর ও হিন্দুদের জন্য অবমাননাকর বলে দাবি করেছেন ভারতের হিন্দুদের একাংশ। এদের মধ্যে কেউ কেউ দৃশ্যটি বাদ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন। সিনেমাতে উঠে এসেছে পারমাণবিক বোমা তৈরির মূল কারিগর, পদার্থবিদ জে. রবার্ট ওপেনহাইমারের জীবন। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৩০ এর দশকের শুরুতে তিনি হিন্দু পুরান নিয়ে আগ্রহী হন এবং ভগবদগীতা পড়ার জন্য সংস্কৃত ভাষা শেখেন তিনি। ‘ওপেনহাইমার’ চলচ্চিত্রে ওপেনহাইমারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিলিয়ান মার্ফি। ছবিতে একটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, নিজের প্রেমিকা জিন ট্যাটলকের সঙ্গে (ফ্লোরেন্স পিউ অভিনীত) যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যেই একপর্যায়ে পিউ থেমে যান এবং ভগবদ্গীতার একটি কপি হাতে তুলে নেন এবং মার্ফিকে বলেন তাকে পড়ে শোনাতে। তখন মার্ফি ভগবদ্গীতা থেকে একটি লাইন পড়েন- ‘এখন আমিই হয়ে উঠেছি মৃত্যু, বিশ্ব ধ্বংসকারী’। এরপরে আবারও তারা যৌনতায় লিপ্ত হন। ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার এই দৃশ্যটিই ভারতের কিছু ডানপন্থী গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির একজন নেতা এই সিনেমাকে ‘হিন্দুত্ববাদের ওপর আঘাত’ এবং ‘হিন্দুবিরোধী শক্তিগুলোর একটি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। শনিবার ভারতের তথ্য কমিশনার উদয় মহুরকর এক বিবৃতিতে জানান, আমরা মনে করি, আপনি যদি এই দৃশ্যটি সরিয়ে দেন এবং এতে করে হিন্দুদের মন জয় করা হয়, তাহলে একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে আপনার পরিচিতি আরও বেড়ে যাবে এবং কোটি কোটি মানুষের বন্ধুত্ব পাবেন আপনি। ‘ওপেনহাইমার’ মুক্তিকে সামনে রেখে অভিনেতা কিলিয়ান মার্ফি বলেছিলেন, তিনি এই ছবির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ভগবদগীতা পড়েছেন। ভারতীয় চলচ্চিত্র সমালোচক সুচরিতা ত্যাগীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার মনে হয়েছে- এর কথাগুলো খুবই সুন্দর, অনুপ্রেরণামূলক। আমার মনে হয় এটা ওপেনহাইমারের জন্য এক ধরনের সান্ত্বনা ছিল, যেটা তার দরকার ছিল এবং সারাজীবনই সে এখান থেকে সান্ত্বনা পেয়েছে। সূত্র: সিএনএন।
Discussion about this post