ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হত্যা মামলায় ৩ ভাইয়কে মৃত্যুদণ্ড ও তাদের বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার বাসিন্দা তিন ভাই জাকির খাঁ (৪০), মাহবুব খাঁ (৩০) ও গাজী খাঁ (২৪)। এছাড়া তাদের বাবা আমানত খাঁ প্রকাশ আম খাঁকে (৫০) যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আমানত খাঁ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে আমানত খাঁর সঙ্গে শরীফ খাঁর পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয় মাতব্বররা এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করলেও আমানত খাঁর পরিবার রায় অমান্য করে। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট সকালে আমানত খাঁ ও তার তিন ছেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শরীফ খাঁর বাড়ির একটি গাছ কাটতে থাকেন। এতে শরীফ খাঁ বাধা দেন। আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে শরীফ খাঁ, তার ছেলে রবিন খাঁ (২২), রাসেল খাঁ (১৮), স্বজন মোশারফ খাঁ (৪৫), বাদশা খাঁ (২৫) ও আছিয়া বেগমকে (৭৫) মারধর করেন। এ সময় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে শরীফ খাঁকে মারাত্মক জখম করে চলে যান তারা। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকরা শরীফ খাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শরীফ খাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম হত্যা মামলা করেন। মামলাটি আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আকরামুল হককে তদন্ত করতে দেওয়া হয়। তদন্তকালেই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মামলার আসামি আমির খাঁ (২৮) মারা যান। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল এসআই আকরামুল হক কির খাঁ, মাহবুব খাঁ, গাজী খাঁ ও আমানত খাঁ বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আজ সোমবার দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন।
Discussion about this post