স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যাচ শুরুর আগেই গ্যালারিতে উত্তেজনা তুঙ্গে, দুই দলের সমর্থকরা জড়িয়ে পড়েন হাতাহাতিতে। ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনাল, তাই এমন বিদ্যুৎ ছুটে যাওয়া আবহ যেন অপ্রত্যাশিত নয়। তবে মাঠের ভেতরের উত্তেজনা আর উত্তাপকে ছাপিয়ে ইতিহাস লিখে গেল ইংলিশ ক্লাব চেলসি। রিয়াল বেতিসকে ৪-১ গোলে হারিয়ে উয়েফার পাঁচটি ক্লাব ট্রফিই জেতা প্রথম দল হয়ে রেকর্ড গড়েছে ব্লুজরা। লন্ডনের ক্লাবটি জিতে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ, সুপার কাপ, কাপ উইনার’স কাপ এবং এবার কনফারেন্স লিগ! ম্যাচের নবম মিনিটেই রিয়াল বেতিস এগিয়ে যায়। অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ইসকোর নিখুঁত পাস থেকে গোল করেন আব্দে এজালজুলি। স্প্যানিশ ক্লাবটি একের পর এক আক্রমণে কাঁপিয়ে তোলে চেলসিকে। ২১ মিনিটে ব্যবধান ২-০ হয়ে যেতে পারতো, কিন্তু ভাগ্য ছিল ব্লুজদের পক্ষে। প্রথমার্ধ শেষ হয় বেতিসের ১-০ লিডে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চিত্রটাই বদলে যায়। ঘুরে দাঁড়ায় চেলসি। ৬৫ মিনিটে কোল পালমারের দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট থেকে হেডে গোল করেন এঞ্জো ফার্নান্দেজ। তারপর পালমার নিজেই বুক দিয়ে বল বাড়িয়ে স্কোরশিটে নাম লেখান নিকোলাস জ্যাকসন। মাত্র ১৮ মিনিটের ব্যবধানে পরপর তিনটি গোল আদায় করে নেয় চেলসি। বেতিস যখন সমতায় ফেরার চেষ্টা করছে, তখনই সানচোর গোলে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্লুজরা। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ২০ গজ দূর থেকে মইসেস কাইসেদোর নেওয়া শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক বদলে জালে প্রবেশ করে, শেষ পেরেক ঠুকে দেয় বেতিসের কফিনে। এনজো মারেসকার কোচিং ক্যারিয়ারে প্রথম মৌসুমেই বড় ট্রফি এ যেন রূপকথার চেয়েও বেশি কিছু। ২০২২ সালের পর প্রথম কোনো বড় ট্রফি ঘরে তুললো চেলসি। আর বেতিসের জন্য এটি হয়ে রইলো ব্যর্থতার ইতিহাস। ক্লাব ইতিহাসে প্রথম ইউরোপীয় ফাইনাল খেলেও শেষ হাসি হাসতে পারলো না তারা। ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেও স্বপ্নভঙ্গ হলো ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অ্যান্তনির। আর স্প্যানিশ ফুটবলের জন্য এ এক হতাশার রাত, ২০০২ সালের পর ইউরোপীয় কোনো ফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাব হেরে গেল বিদেশি দলের কাছে। শেষ ২৭ ইউরোপীয় ফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাবের অপরাজেয় যাত্রারও ইতি ঘটাল চেলসি। এই জয় শুধু একটি শিরোপা নয়, ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকা—চেলসি সেটা প্রমাণ করল গ্যালারির উত্তেজনা, মাঠের দাপট আর পরিসংখ্যানের পাতায় নাম লিখিয়ে।
Discussion about this post