ঢাকা: বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের চলমান গোলাগুলির ঘটনাকে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মঙ্গলবার কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে আসিয়ানভুক্ত দেশের বাইরে অন্য সব দেশের ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় সব দেশের মিশন প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আসিয়ানবহির্ভূত দেশ ও মিশনের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই আমন্ত্রণে অধিকাংশ দেশ সাড়া দিলেও আসেনি মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত চীন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনারকে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনায় বাংলাদেশ তার অবস্থান জানিয়ে দেয়। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম তাদেরকে মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনার বিষয়ে ব্রিফ করেন। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিশর, তুরস্ক, জাপান, রাশিয়া, ভারত সহ প্রায় সব দেশের প্রতিনিধি অংশ নেয়। পরে সাংবাদিকদের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা এই কথা বলেছি যে, আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়েছি পাঁচ বছর হয়ে গেল। তারা (মিয়ানমার) একটা রোহিঙ্গাও আজ পর্যন্ত ফেরত নেয়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন যে, আমরা ধৈর্য্যের সাথে কাজ করছি।’ খোরশেদ আলম বলেন, ‘মিয়ানমারের উসকানিতে পা না দিয়ে বাংলাদেশ ধৈর্য্য পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূতরা জানিয়েছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতিসংঘে গেলে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে।’ ‘বৈঠকে দূতদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ এমন কোন কাজ করেনি, যে এদেশের নাগরিকরা নিজেদের জমিতে নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না, গরু-বাছুর চরাতে পারবে না, ঘরে থাকতে পারবে না।’ খোরশেদ আলম বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ যে ধরনের গোলযোগই থাকুক, এ দেশের সীমানায়, মিয়ানমারের গোলা, মর্টার শেল আসা অগ্রহণযোগ্য মনে করেছেন সব দেশের রাষ্ট্রদূতরা। তারা বলেছেন, তারা ঢাকার অবস্থান তাদের ক্যাপিটালে জানাবেন।’ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই চলছে, মিয়ানমার সেনাদের খবর আসছে। এই লড়াইয়ের মধ্যে মিয়ানমার সেনাদের ছোড়া বেশ কিছু মর্টার শেল কয়েক দফায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ পাঁচজন।
Discussion about this post