ঢাকা: সারা বিশ্বে প্রায় পৌনে এক কোটি বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন। সরকারের প্রণোদনার ফলে বিপুল পরিমাণ এ প্রবাসীরা বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে গেল ২০২১ সালে প্রবাসী আয়ে বিশ্বে সপ্তম অবস্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের ‘অভিবাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ (২২ বিলিয়ন ডলার) প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধির হার কমে ২ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এতে আরও বলা হয়, মূলত সরকারি প্রণোদনা এবং দেশে পরিবারের কাছে অর্থ পাঠানোর কারণে এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত রোজার শুরুতে (মার্চ মাসে) ২৪ শতাংশ উল্লম্ফন হয়। প্রতিবছর ঈদের আগে এটা হয়ে থাকে। তবে গত ৮ মাসে দেশে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক জানায়, এ বছরের শেষ নাগাদ প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধির হার কমে ২ শতাংশে নামতে পারে। প্রবাসী আয়ে শীর্ষ ছয়ে থাকা দেশগুলো হলো- ভারত, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন, মিশর ও পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। ২০২০ সালে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ার পর ২০২১ সালে ভারতের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ বেড়ে ৮৯ বিলিয়ন ডলার হয়, অন্যদিকে পাকিস্তানে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন হয়েছে। প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হারকে ‘অনিশ্চিত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে গত দুই বছরে করোনাভাইরাসের সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশের শ্রমবাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বলছে, গেল বছরে ছয় লাখেরও বেশি কর্মী গেছেন বিভিন্ন দেশে। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। শুধু গেল ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি কর্মী কাজ নিয়ে বিদেশে গেছেন। এই মাসে গেছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৩১৬ জন কর্মী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি ছিলো বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ কর্মীর গমন। এর আগে, ২০১৭ সালের মার্চে ১ লাখের কিছু বেশি কর্মী বিভিন্ন দেশে পাঠানো গিয়েছিলো। গেল বছর যাওয়া প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ফলে প্রবাসী আয় আরও বাড়তে বলে আশা করা যাচ্ছে।
Discussion about this post