ঢাকা: চলমান সঙ্কটের মধ্যে দেশ থেকে ডলার পাচারের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৮০ হাজার ডলার উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় তৎপর হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডলার পাচার ঠেকাতে দেশের সব সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নজরদারি বাড়িয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও দেশের মুদ্রাবাজারে চলছে ডলার সঙ্কট। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এ অবস্থা। সঙ্কট মোকাবেলায় এরই মধ্যে ব্যয় কমিয়েছে সরকার। অন্যদিকে এই সুযোগে ইচ্ছামতো দামে খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে আবার ঘটেছে ডলার পাচারের চেষ্টা। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর ডিবির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কেউ যদি অবৈধভাবে ডলার মজুদ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া কেউ অবৈধভাবে জাল ডলার তৈরি করে, সে তথ্য পেলেও চালানো হবে অভিযান। এ বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। এরই মধ্যে ডলার নিয়ে খোলাবাজারে কারসাজি করায় দেশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ২ আগস্ট এমন পাঁচটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ৪২ মানি এক্সচেঞ্জকে শোকজ করা হয়েছে। অভিযানে আরও ৯ প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে সিলগালা। এসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স না নিয়ে এতদিন ডলারের ব্যবসা করে আসছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারে অনিয়ম পেলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। এরই মধ্যে আমাদের অভিযানে পাঁচটি মানি চেঞ্জার হাউসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাদের কাছে নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে। যাদের লাইসেন্স নেই তাদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ডলার পাচারের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মোঃ ইশতিয়াক বলেন, বিজিবির একটি বিশেষ টহল দল ফুলবাড়ি সীমান্ত পিলার ৮৫ থেকে ৩০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে অভিযান চালায়। এ সময় বিজিবির সদস্যরা দেখতে পান এক ব্যক্তি একটি ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি তাকে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ধরা পড়ার ভয়ে লোকটি ব্যাগ ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, এ সময় বিজিবির টহল দল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। একটি দল চোরাকারবারিকে ধাওয়া করে, আর অপর দল ব্যাগ উদ্ধার করে। এ সময় ব্যাগে কাগজে মোড়ানো আটটি প্যাকেট পাওয়া যায়। যাতে মেলে মোট ৮০ হাজার ইউএস ডলার। বিজিবি সদর দফতরের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ডলার পাচার ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি। একই সঙ্গে সীমান্ত অপরাধ দমনে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি। ডলার যেই পাচার করতে যাবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Discussion about this post