স্পোর্টস রিপোর্ট: বৈশাখের বুধবারের মেঘলা সকাল। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন সরগরম হয়ে উঠলো। দেশের পুরো ক্রীড়াঙ্গন যেন এদিন পসরা সাজিয়ে বসেছিল। ক্রীড়াঙ্গনে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলা যেন। প্রায় সব ধরনের খেলার সাবেক ও বর্তমান ক্রীড়াবিদ, কোচ, সংগঠক … কে না ছিলেন এই মধুর মিলনমেলায়। বহু বছর পর দেখা-সাক্ষাৎ। তাই আবেগে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা, আবেগে আপ্লত হওয়া, হাসি-ঠাট্টায় মেতে ওঠা, মোবাইলে সেলফি তোলার ধুম … ক্রীড়াঙ্গনে এমন দৃশ্য দেখা গেল অনেকদিন পর। উপলক্ষ্যটা ছিল বড়- মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। আয়োজক ছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ২০১৩-২০২০ সাল পর্যন্ত ৮৫ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব পেয়েছেন ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ এই সম্মানজনক পুরস্কারটি। এদের মধ্যে কয়েকজন জনকণ্ঠকে জানান তাদের পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি। চলুন শোনা যাক তা। জুয়েল রানা, ক্যাটাগরি-খেলোয়াড় (ফুটবল)॥ অনেকদিন মাঠে খেলেছি। আজ একটা স্বীকৃতি পেলাম। এর চেয়ে বড় আনন্দের কিছু নেই। কাজী আনোয়ার, ক্যাটাগরি-খেলোয়াড় (ফুটবল) ॥ সরকার আমাদের সম্মান করেছে এজন্য কৃতজ্ঞ। তবে এটা আরো আগে হলে আরো সুন্দর হতো। খন্দকার রকিবুল ইসলাম, ক্যাটাগরি-খেলোয়াড় (ফুটবল) ॥ ১৯৭৩ সালে প্রথম আসি ঢাকায়। তখন আমি বাচ্চা ছেলে। ৪৯ বছর ধরে আছি ফুটবলের সঙ্গে। আজ বড় একটা স্বীকৃতি পেলাম। কতটা ভালো লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। বেগম সুলতানা পারভীন লাভলী, ক্যাটাগরি-খেলোয়াড় (এ্যাথলেটিক্স) ॥ আরও আগে পাওয়া উচিত ছিল এই পুরস্কার। কেন দেরিতে পেলাম, তা বলতে পারবো না। এর আগে যারা পুরস্কার পেয়েছে তাদের থেকে আমার পদক বেশি আছে। তবে দেরিতে হলেও পুরস্কার পেয়েছি। বেশি ভালো লাগছে। রফিক উল্ল্যাহ আখতার মিলন, ক্যাটাগরি-সংগঠক (এ্যাথলেটিক্স) ॥ তৃণমূল থেকে অনেক খেলোয়াড় তুলে এনেছি। তারা জাতীয় পর্যায়ে পদক জিতেছে। চাকরি পেয়েছে। নিজেদের পরিবারের হাল ধরেছে। ভাবতে ভালো লাগছে যে পরিশ্রমের সেই মূল্য পেলাম। আমার আর কিছুই পাওয়ার নেই। তৈয়েব হাসান সামছুজ্জামান, ক্যাটাগরি-সংগঠক (রেফারি) ॥ রেফারিং-আম্পায়ার থ্যাঙ্কলেস জব কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আমাদের মূল্যায়ন করায় ধন্যবাদ। রেফারিং জীবনে অনেক প্রাপ্তির মধ্যে আজ বড় একটা প্রাপ্তি হলো। তবে এই এক লাখ টাকা নেব না, টাকাটা আর্তমানবতার সেবায় দান করব। শাহরিয়া সুলতানা, ক্যাটাগরি-খেলোয়াড় (ভারোত্তোলন) ॥ আসলে গতকাল রাতে ঘুমাতেই পারিনি। কখন সকাল হবে, কখন পুরস্কার পাব তানভীর মাজহার তান্না, ক্যাটাগরি-সংগঠক (ফুটবল) ॥ এতদিন পর কাজের স্বীকৃতি পেলাম, মন্ত্রণালয় পুরস্কার দিয়েছে। এতেই অনেক ভালো লাগছে। আওলাদ হোসেন, ক্যাটাগরি-সংগঠক (জুডো, কারাতে ও মার্শাল আর্ট) ॥ এই পুরস্কার পেয়ে ভীষণ খুশি। এটা আমার জীবনে বড় এক প্রাপ্তি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মরহুম আফজালুর রহমান সিনহার পক্ষে তার সতীর্থ জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা, ক্যাটাগরি-সংগঠক (ক্রিকেট) ॥ জীবিত থাকতেই এই পুরস্কার প্রদান করা উচিত। তাহলে সবাই সবার জীবদ্দশায় একটি প্রশান্তি পায়। নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ক্যাটাগরি-সংগঠক (ক্রিকেট কোচ) ॥ কাজের স্বীকৃতি পেলে আরো ভালো কিছু করার তাগিদ বাড়ে। জালাল ইউনুস, ক্যাটাগরি-সংগঠক (ক্রিকেট) ॥ বাংলাদেশে সকল ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের স্বপ্ন থাকে একদিন ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়ার। সর্বোচ্চ এই পুরস্কার পাওয়ায় ভালো লাগছে। ক্রীড়াঙ্গন এবং বিশেষত ক্রিকেটের প্রতি দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। কাজী নাবিল আহমেদ, ক্যাটাগরি-সংগঠক (ফুটবল) ॥ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আবাহনীর অবদান অনেক। এই ক্লাবের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর পরিবার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আবাহনী ক্লাবের উত্তরোত্তর সাফল্যের জন্য আরো বেশি নিবেদিত হব।
Discussion about this post