রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে উপজেলার দুর্গম বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বি ব্লক এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত সুরেশ সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে দাবি করেছে স্থানীয় একাধিক সূত্র। তবে তিনি সংগঠনটির কোনো দায়িত্ব পালন করছেন কিনা, সেই সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি তারা। এমনকি এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি জনসংহতি সমিতিও। স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, নিহত সুরেশ চন্দ্র চাকমা জীবেশ মূল জনসংহতি সমিতির অনেক পুরনো কর্মী এবং সাবেক গেরিলা সংগঠন শান্তি বাহিনীর সদস্য। তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক নানান দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি উপজেলা কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংগঠনটির বিচার কমিটির উপজেলা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সুরেশ তার নিজের বাড়িতে নয়, বাড়ির কাছেই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রাতযাপনকালেই গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের। প্রাণনাশের ভয়ে তিনি নিয়মিতই নিজ বাড়ির বাইরে রাত্রিযাপন করতেন বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো। এদিকে, সকালে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কোন মরদেহেরও হদিস পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের ধারণা, তারা পৌঁছানোর আগেই লাশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন খান জানিয়েছেন, ‘হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে নিশ্চিতই বলা যায়। তবে লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আমরা লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। স্থানীয়রাও এই ব্যাপারে সহযোগিতা করছে না।’ তবে এই বিষয়ে মুখ খুলছে না পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিও। সংগঠনটির দায়িত্বশীল কোনো নেতাই ফোনও ধরছেন না। অন্যান্য ঘটনায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিবৃতি পাঠানো হলেও এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় ছয় ঘণ্টা পরও কোনো বিবৃতি পাঠায়নি সংগঠনটি। তবে সংগঠনটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ তথ্য ও প্রচার সম্পাদক জুপিটার চাকমা জানিয়েছেন, তাদের নিজেদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ বিবাদে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি। তিনি বলেন, ওই এলাকাটি সম্পূর্ণই জনসংহতির ঘনিষ্ঠ সংগঠন ইউপিডিএফ এর নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে আমাদের পক্ষে প্রবেশ করাও কঠিন ও কষ্টসাধ্য। তারা নিজেরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। তারা অস্ত্রের রাজনীতি করে। আমরা হত্যা ও অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই।’
Discussion about this post