ঢাকা : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্টুডেন্ট বাসে সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা । নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ইরফানুল ইসলাম ইফতুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে এ রকম জঘন্য হামলার নিন্দা জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর ওপর একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি জানাচ্ছি।’ মানববন্ধনে গণিত বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী দীন ইসলাম আশিক বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলাম। প্রথমে কিছুটা বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর আশিকের ওপর জোট বেঁধে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এই সকল ছাত্র নামক সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা হোক। ভবিষ্যতে যেন এরকম ঘটনা আর না ঘটে তার জন্য সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হোক। ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মজিবুর রহমান শিশির বলেন, আমাদের এক ভাই নিজের ক্যাম্পাসের বাসে হামলার শিকার হয়েছে। ৫ -৬ জন জোট বেঁধে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এটা সত্যি লজ্জার। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীরা এই জঘন্য অপরাধ ঘটিয়েছে অবিলম্বে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হোক। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতে পারে না। জানা যায় গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বঙ্গবাজার যাবার পথে টেকনিক্যালে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক হামলার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সংগ্রাম ইসলাম। এই হামলার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন । অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু ভিকটিম হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি তাই তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে । লিখিত অভিযোগে আহত শিক্ষার্থী সংগ্রাম ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার বঙ্গবাজার থেকে একতলা বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলাম, টেকনিকালের কাছাকাছি বাস আচমকা ব্রেক করলে আমি কাঁধে ও বুকে জোরে সামনের দরজার সাথে বাড়ি খাই। আমি এভাবে ব্রেক কেনো করলো ড্রাইভারের কাছে জানতে চাইলে এক বড় ভাই হুট করে উগ্রভাবে বলেন ‘হাত ছিল না তোর’ আমি তাকে বললাম, ভাই আমি দুপুরে খাইনি আর দুটো ব্যাগের জন্য ব্যালেন্স করতে পারিনি। আমার কথা শেষ না করতেই সে আমাকে বলে ‘তোর ব্যাচ কত! তোর পরিচয় দে!’ এসময় তার সঙ্গে আরো দুই তিনজন এসে যুক্ত হয়।’ তিনি আরও বলেন, বারবার উগ্রভাবে আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় আমি পরিচয় দেই তখন তারা আমাকে গালি দিয়ে বাস থেকে নেমে যেতে বলে। এরপর বাস থামিয়ে আমাকে জোরপূর্বক নামিয়ে আমার মাথায় জোরে জোরে উপর্যুপরি ঘুষি থাপ্পড় মারা শুরু করে। আমি প্রতিরোধ করতে গেলে তার সাথে থাকা দুইজন আমার হাত ধরে আটকিয়ে পেছন দিয়ে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে একটা স্ট্যাম্প নিয়ে এসে প্রচণ্ড জোরে আমার পায়ে ও পেছনে মারতে থাকলে স্ট্যাম্পটি ভেঙে যায়।’
Discussion about this post