বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী শিবকুমার শর্মা আর নেই। তিনি মূলত বাদ্যযন্ত্র সন্তুরবাদক হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। আজ মঙ্গলবার, ১০ মে মুম্বাইয়ে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। জানা গেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮৪ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে গেলেন শিবকুমার। মৃত্যুকালে রেখে গেছেন স্ত্রী মনোরমা এবং পুত্র রাহুল শর্মাসহ বহু গুণগ্রাহী ও অনুরাগী। উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে ‘সন্তুর’ নামে বাদ্যযন্ত্রটির আগে তেমন মর্যাদা ছিল না। সেই যন্ত্রকে শাস্ত্রীয় সংগীতের মূল ধারায় এনে ফেলার কৃতিত্ব শিবকুমারের। হরিপ্রসাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে শিবকুমার বলিউডের মূল ধারার ছবিতে কালজয়ী সুরসৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম ‘সিলসিলা’। পুত্র রাহুল বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। সন্তুরবাদক হিসাবে তিনিও প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। ১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুর একটি সম্ভ্রান্ত সংগীতজ্ঞ পরিবারে জন্ম শিবকুমারের। তার বাবা উমা দত্তশর্মা ছিলেন প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই শিবকুমার তার বাবার কাছ থেকে শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। উমা সন্তুর নিয়ে অনেক গবেষণা করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন যে, পুত্রকে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সন্তুরবাদক হিসেবে গড়ে তুলবেন। এই চিন্তা থেকে শিবকুমারকে তেরো বছর বয়স থেকে সন্তুরের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তী কালে ‘সন্তুর’ যন্ত্রটি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন শিবকুমার। পরে শিবকুমার চলে আসেন মুম্বাই। তার বিচরণক্ষেত্র গোটা বিশ্ব হলেও মূলত তিনি কাজ করেছেন মুম্বাই থেকেই। সংগীত নাটক অ্যাকাডেমিসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বহু পুরস্কার পেয়েছেন শিবকুমার। ২০০১ সালে পান পদ্মবিভূষণ। এ ছাড়াও আমেরিকার সম্মাননীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় তাকে। শিবকুমারের প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন উস্তাদ আমজাদ আলি খান। তিনি লেখেন, ‘পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণ একটি যুগাবসান। তিনি সন্তুর যন্ত্রটির অগ্রণী শিল্পী। আমার কাছে অবশ্য এটা ব্যক্তিগত শোকের মুহূর্ত। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। তার সংগীত বাজতে থাকুক আমাদের হৃদয়ে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শোকপ্রকাশ করেছেন।
Discussion about this post