ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যোগাযোগব্যবস্থার ওপর চাপ। আকাশপথে বাড়ছে বিমান চলাচল। পৃথিবীর জ্বালানিনির্ভর যানবাহন থেকে তো বায়ুদূষণ হচ্ছেই, সঙ্গে আকাশপথে যাত্রীচাপ ও বিমান চলাচল বাড়ায় দূষিত হচ্ছে বায়ুমণ্ডলের বাতাসও। পরিবেশবান্ধব বিমান তৈরির চাপ কোনো কাজেই আসছে না। সব বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই সাশ্রয়ীমূল্যে বিমান তৈরিতে ব্যস্ত। অবশেষে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিমান পরিচালনা আর নতুন করে বিমান তৈরির ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব বিমান তৈরির ওপর জোর দিতে অনুদান ঘোষণা করেছে মার্কিন বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। শব্দদূষণ অফার পরিবেশবান্ধব বিমান চলাচলে ১০ কোটি ডলারের অনুদান ঘোষণা করেছে এফএএ। জলবায়ু পরিবর্তনের লাগাম টানতে বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপের মধ্যে এটি একটি। অনুদানের এই অর্থ পাবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে আছে বোয়িং, প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি, হানিওয়েল এরোস্পেস আর জিই অ্যাভিয়েশন। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ আর শব্দ দূষণরোধে কাজ করতে বিভিন্ন প্রকল্পে এয়ারলাইন্সগুলোকে দেওয়া হবে এ অর্থ। কিন্তু সরকার থেকে যে পরিমাণ অর্থ অনুদান দেওয়া হবে ঠিক সে পরিমাণ অর্থই এয়ারলাইন্সগুলোকে নিজের পকেট থেকে ব্যয় করতে হবে। পরিবেশ দূষণ এখন সব দেশে আলোচনার শীর্ষে। কিন্তু অ্যাভিয়েশন খাত পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সব এয়ারলাইন্স কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এই লক্ষ্য কীভাবে অর্জন করবে এয়ারলাইন্সগুলো তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। কয়েকশ’ মানুষ বহন করতে পারবে এমন যাত্রীবাহী ইলেকট্রিক বিমানের তো অস্তিত্ব নেই। কয়েক দশকে এমন বিমান তৈরি হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। বোয়িংয়ের মতো কিছু কোম্পানি জ্বালানিভিত্তিক জেট ফুয়েলের পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের চিন্তা করছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করছে এ পদক্ষেপ। ইউরোপের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসও হাইড্রোজেন পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ করছে। কিন্তু এই পরিকল্পনাগুলো কবে বাস্তবায়ন হবে বা কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে কোনো সঠিক ধারণা নেই। জো বাইডেন ২০৩৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় আনতে চান। ২০৩০ সালের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় চলাচলকারী অর্ধেক গাড়িই যেন বৈদ্যুতিক হয়, সে প্রত্যাশাও করছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি ঘোষণা দেন, ২০৫০ সালের মধ্যেই জেট ফুয়েল থেকে পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে বিমান পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। এফএএ এরই মধ্যে ২২২ কোটি ডলার অনুদান ছাড় দিয়েছে। ইঞ্জিন সিস্টেম, বিমানের পাখা, ফ্লাইট সফটওয়্যার আর বিকল্প জেট ফুয়েল প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে অর্থ। এই প্রকল্পগুলোর জন্য যে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে ২০৫০ সাল নাগাদ ৩০ লাখ গাড়ি রাস্তা থেকে সরিয়ে নিলে কার্বন নিঃসরণ যে পরিমাণ কমত, সেই সমপরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কমবে। বাইডেনের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন সব এয়ারলাইন্স। অনুদানের অর্থ ইঞ্জিন আধুনিকায়ন, বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন তৈরিতে বিনিয়োগ, শব্দ কমানো আর বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিতে ব্যয় করা হবে বলেও জানিয়েছে মার্কিন বৃহত্তম এয়ারলাইন্সগুলো।
Discussion about this post