বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: রুশ সংবাদমাধ্যম জানায়, এই স্পেস স্টেশনটি বয়সের কারণে নানা সমস্যায় জর্জরিত। বছরের পর বছর ধরে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে এই স্টেশনে। হার্ডওয়্যারগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় রুশ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সতর্ক করে। এয়ারলিক, ইঞ্জিন বিকল, ঠিকমতো কাজ না করা আর ফাটলসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে এই স্টেশনে। রুশ স্পেস এজেন্সি রসকসমস জানায়, পরে পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। স্টেশনের ব্যাটারি রিচার্জ করার সময় ধোঁয়া দেখা যায়। প্লাস্টিক পোড়া গন্ধও স্পেস স্টেশনের রাশিয়ার অংশ থেকে আসছিল। মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা জানায়, একটি স্পেসওয়াক হওয়ার কথা আছে, যেটা যথাসময়েই হবে। রাশিয়ার নাউকা মডিউলে বর্তমানে দুজন নভোচারী কাজ করছেন। রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে, আইএসএস কিছু জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে, কারণ এই স্টেশনের যন্ত্রপাতি অনেক পুরনো, বিকল হওয়ার পথে কিন্তু মেরামতের অযোগ্য। রাশিয়ার ফ্লাইট সিস্টেমের ৮০ শতাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। রাশিয়ার জায়রা কার্গো অংশে ফাটল দেখা গেছে, যেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়বে। ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র কানাডা জাপান আর ইউরোপের কয়েকটি যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয় আইএসএস। ১৫ বছর মেয়াদ ছিল এই স্পেস স্টেশনের। রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, স্টেশনের যে অবস্থা তাতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০৩০ সালের পর এই স্পেস স্টেশন আর কাজ করার উপযুক্ত থাকবে না। গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আরেকটি দুর্ঘটনা হয়েছিল। তখন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাউকা মডিউলের জেট কোনো আগাম সতর্কতা ছাড়াই চালু হয়ে যায়, এর ফলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নাড়া খেয়েছিল। রাশিয়া গত এপ্রিল মাসে জানায়, তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাবে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ নিজেদের আলাদা মহাকাশ স্টেশন তৈরি করবে। তবে এর কোনোকিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এখন সাতজন নভোচারী আছেন। এদের মধ্যে দুজন রাশিয়ার, তিনজন যুক্তরাষ্ট্রের, একজন ফ্রান্সের এবং একজন জাপানের। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ক্রুরা ধোঁয়া এবং পোড়া প্লাস্টিকের গন্ধ পাওয়ার পর সেখানে স্মোক অ্যালার্ম বেজে উঠেছিল। এর আগে চলতি মাসের শুরুতেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, বেশ কয়েকটি বড় ফাটল দেখা দিয়েছে সেখানে। রাশিয়ার হিউমেন স্পেস ফ্লাইট প্রোগ্রামের প্রকৌশলী ভ্লাদিমির সলভিয়ভ জানান, আরও বিপজ্জনক পর্যায়ে যেতে পারে এই ফাটলগুলো। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের রাশিয়ার অংশে দেখা গেছে এ ফাটল। তড়িঘড়ি করে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ফাটলগুলো আরও বড় হতে পারে। ছড়িয়ে পড়তে পারে মহাকাশ স্টেশনের অন্য স্থানেও। এমনকি সেই সব জায়গার বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে পারে মহাকাশেই, যা মহাকাশে আবর্জনা হয়ে, বিপদ ঘটাতে পারে; বহু মহাকাশযান ও পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা অন্যান্য বহু উপগ্রহেরও।
Discussion about this post