আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীন ও পাকিস্তান বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক যৌথ বার্তায় জানিয়েছে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন এবং নতুন অক্ষ বা জোট গঠনের ফলে তাদের লোহ-দৃঢ় সম্পর্কের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।এই বার্তাটি এমন এক সময় এলো, যখন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র পাকিস্তান সফরে রয়েছেন। তিনি পাকিস্তান-চীন কৌশলগত সংলাপে নেতৃত্ব দেন এবং দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন।চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনীতি ব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই তার তিন-দেশ সফরের শেষ পর্যায়ে বুধবার ইসলামাবাদে পৌঁছান। তিনি এর আগে নয়াদিল্লি ও কাবুল সফর করেছেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং ই পাকিস্তান সফরকে “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ” বলে আখ্যা দেন।ওয়াং ই-র সফর এমন সময়ে হলো যখন বিশ্ব ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে নানা নাটকীয় পরিবর্তন ঘটছে। যেমন- পাক-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে, বিপরীতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কিছুটা খারাপ হয়েছে, আবার চীন-ভারত সম্পর্কেও নতুন মোড় এসেছে।অনেকে ধারণা করছিলেন, ভারতের দিকে চীনের কূটনৈতিক উদ্যোগ পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতার জবাব হতে পারে। অনুরূপভাবে, পাকিস্তানের মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি ঘনিষ্ঠতাও চীন থেকে দূরত্ব সৃষ্টির ইঙ্গিত দিতে পারে।তবে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টভাবে এসব জল্পনার উড়িয়ে দিয়ে বলেন, চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং তা বাইরের কোনো পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল নয়।এক প্রশ্নের উত্তরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অর্থনৈতিক দিক থেকে অভূতপূর্ব পরিবর্তন চলছে। আমরা জ্বালানি ও পণ্যের বাজারে অস্থিরতা, সরবরাহ চেইনের ব্যাঘাত, বাণিজ্য ও প্রযুক্তিতে নতুন বাধা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মতো সমস্যায় জর্জরিত।”তিনি বলেন, “এ সকল চ্যালেঞ্জ আরও তীব্র হয়েছে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্ত্রাসবাদ এবং কিছু দেশের বর্জনমূলক নীতির কারণে; যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।”তবুও, তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির মূল স্তম্ভ হলো সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, স্বার্থের মিল, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে।তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চীন আমাদের সর্ববস্থায় বিশ্বস্ত অংশীদার, ভাই ও প্রতিবেশী।”ওয়াং ই বলেন, পাকিস্তান ও চীন বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার বন্ধনে আবদ্ধ এবং উভয় দেশ সবসময় একে অপরের পাশে থেকেছে।
Discussion about this post