ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার তৃতীয় ডোজ (বুস্টার ডোজ) নিয়েছেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে টিকার তৃতীয় ডোজ নেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। এবার তিনি ফাইজারের টিকা নিয়েছেন বলে জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এ সময় খালেদা জিয়াসহ মোট চারজন টিকা নিয়েছেন। অন্যদের মধ্যে খালেদা জিয়ার পারিবারিক সহকারী রুপা শিকদার, আব্দুর রহিম ও আব্দুল খালেক। এর আগে বিকাল সোয়া চারটার দিকে বুস্টার ডোজ টিকা নিতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয় খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে আসেন তার ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতিমা ও গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। হাসপাতাল চত্বরে গাড়িতে বসেই টিকা নেন খালেদা জিয়া। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মুরশিদা খাতুন বিকাল ৪ টা ৪৯ মিনিটে টিকা পুশ করেন। এ সময়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স মেহেদী হাসান ও লিপি আরা খাতুন সহযোগী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তবে নেতাকর্মীদের চাপের কারণে তাদের টিকা দিতে অনেকটা বেগ পেতে হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বেগমখালেদা জিয়া ফাইজার কোম্পানির প্রস্তুতকরা বুস্টার ডোজ টিকা নিয়েছেন। আগে নিয়েছিলেন মডার্নার টিকা।’ তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াসহ মোট চারজন বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। অন্য তিনজন হলেন খালেদা জিয়ার পারিবারিক সহকারী রুপা শিকদার, আব্দুর রহিম ও আব্দুল খালেক। এদিকে খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন হাসপাতালের আশপাশ। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, তার লিভার এবং অন্যান্য যে গুরুতর সমস্যা আছে তা এখনো আছে। তবে রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ায় এখন কিছুটা ভালো আছেন। কিন্তু তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন। যা এরআগে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন। এসময় তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, এক দেশে দুই নীতি। কয়েকদিন আগে তোফায়েল আহমেদ বিদেশে গেলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য গেলেন। এরআগে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। অথচ গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে এখনো বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দিচ্ছে না। খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, গত বছরের ১৯ জুলাই প্রথম ডোজ এবং ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। টিকা গ্রহণ শেষে বিকেল ৪ টা ৫৩ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে এক বছর বন্দিজীবন কাটানোর পর সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি নিয়ে বাড়িতে থাকার মধ্যে ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে গত বছর প্রায় তিন মাস হাসপাতালে ছিলেন। তখন তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। চিকিৎসা নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি
Discussion about this post