আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) কামার জাভেদ বাজওয়াকে বিশ্বাস করাই তাঁর সবচেয়ে বড় ভুল। ক্ষমতায় থাকার সময় এই ভুলের জন্য অনুশোচনা করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এই কারাবন্দী নেতা। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, সাংবাদিক মেহদি হামাস জেতেওর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন কারাবন্দী ইমরান খান। গত বুধবার তাঁর সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। এই সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক শুধু প্রশ্ন লিখে পাঠাতে পেরেছেন। আর ইমরান খান শুধু উত্তর দিয়েছেন। তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ ছিল না। ইমরান খান এখন আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন। সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, নতুন মেয়াদে সেনাপ্রধান হিসেবে থাকতে মিথ্যা ও অসত্য বিষয় ছড়িয়ে দিয়েছেন জেনারেল (অব.) বাজওয়া। এ জন্য তাঁকেই দায়ী করেন ইমরান খান। এক প্রশ্নে ইমরান খানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কারাবন্দী হওয়ার জন্য কাকে দায়ী করবেন তিনি। এর জবাবে এই নেতা বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে এই কঠিন কাজটা জেনারেল বাজওয়াই করিয়েছেন। আমি অন্য কাউকে দায়ী করি না। তিনি খুব নিখুতভাবে কাজটি করিয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে নিজেকে একজন প্রতারক হিসেবে উপস্থাপন করলেন। মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে তিনি আসলে নিজের পরের মেয়াদ নিশ্চিত করতে চাইছিলেন।’ ডন বলছে, এর আগে ২০১৯ সালে ক্ষমতায় থাকার সময় জেনারেল বাজওয়ার সেনাপ্রধানের তিন বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ইমরান খান। তখন অবসরে যাওয়ার জন্য মাত্র ৩ মাস বাকি ছিল। এরপর ২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে ইমরান অনুশোচনা করে বলেন, এভাবে মেয়াদ বাড়ানোটাই তাঁর বড় ভুল ছিল। ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আমেরিকা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জড়িত ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলোও জেনারেল বাজওয়া করিয়েছেন। তিনি আমার নামে যা তা তথ্য ছড়িয়েছেন। আমেরিকার নেতাদের কানে কুমন্ত্রণা দিয়ে আমাকে আমেরিকার শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।’ ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইমরান খান। এরপর থেকেই একের পর এক সংকটে পড়ছেন ৭১ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ। গত বছরের আগস্ট থেকে জেলখানায় রয়েছেন তিনি। মোট চারটি মামলায় অভিযুক্ত। তবে, এর মধ্যে দুই মামলার কারাদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। ক্ষমতায় থাকার সময় সরকারি কোষাগার থেকে না জানিয়ে উপহার বিক্রি, সহিংসতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্টের অপরাধসহ একাধিক মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এদিকে, আইন বর্হিভূতভাবে বিয়ে করার অপরাধে ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিও জেলখানায় রয়েছেন।
Discussion about this post