স্টাফ রিপোর্টার: লক্ষ্মীপুরের স্কুলছাত্রী স্মৃতি রানি সীমাকে (১৩)দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোঃ সাদ্দাম হোসেন রহিম (রুবেল)কে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।১০ বছর পলাতক থাকার পর র্যাবের হাতে ধরা পড়েছে ধর্ষক সাদ্দাম। রোববার(২৫ ফেব্রুয়ারি)সকালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩ (র্যাব) টিকাটুলি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন,লক্ষ্মীপুর জেলা সদর থানা এলাকায় কৃষ্ণলাল দেবনাথ তার স্ত্রী পুত্রবধূ এবং ৩ নাতনীদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ২০১২ সালের জুলাই মাসের ১৯ তারিখে কৃষ্ণলাল এর বাড়িতে মুখোশ পরে ১৪-১৫ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রবেশ করে। তারা কৃষ্ণলালের পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে।এই সময় তারা কৃষ্ণলাল দেবনাথ, তার স্ত্রী গীতা রানী ও পরিবারের সদস্যদের দেশীয় অস্ত্রদিয়ে মারপিট করে জখম করে রুমে আটকে রাখে।হাতিরঝিলের বাসা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী ঢাবির মুহসীন হলে উদ্ধার পরবর্তীতে তারা কৃষ্ণলালের নাতনী সীমাকে (১৩) একটি কক্ষে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর পরিবারের চিৎকারে আশপাশের লোকজন সীমা ও আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্মৃতি রানী সীমা মারা যায়। এ ঘটনায় কৃষ্ণলাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে ১৪-১৫ জনকে আসামি করে ডাকাতি,ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন। ঘটনার তদন্ত শেষে ২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলার ২০ জন আসামি বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৪ সালে আদালত ১৫ জনকে খালাস দেন এবং ১০ জন আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টে আসামিরা আপিল করলে দুজন আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও বাকি ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তখন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ৪ জন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে একজন পলাতক থাকেন। পরে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ বছর যাবত পলাতক আসামি আন্তঃজেলা ঢাকার দলের সদস্য সাদ্দাম হোসেন ওরফে রুবেল ওরফে রহিমকে উত্তরা থেকে গতকাল গ্রেপ্তার। গ্রেপ্তারের পর তিনি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন পালিয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন সময় মাথার চুল ফেলে দিয়েছেন,দাড়ি বড় রেখেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিকের কাজ করেছেন, নামও বদলে ফেলেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান,নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ আন্তঃজেলা ডাকাতির কার্যক্রমে তিনি অংশগ্রহণ করতেন। তিনি ডাকাত দলের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তারা ডাকাতির জন্য পূর্ব পরিকল্পনা করে ডাকাতির স্থান নির্ধারণ করে সবাই এক জায়গায় মিলিত হয়ে সুযোগ বুঝে ডাকাতির কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
Discussion about this post