বিশেষ প্রতিনিধি: রাজধানীর গুপীবাগে নাশকতা কারীদের দেওয়া বেনাপোল এক্সপ্রেস আগুনের ঘটনায় মৃত চারজনের মরদেহ রেলওয়ে থানা পুলিশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর। দগ্ধা হলেন, চন্দ্রিমা চৌধুরী সুমি(২৫),আবু তালহা(২৩),এলিনা ইয়াসমিন (৪০) ও নাতাশা জেসমিন নেকি (২৫) । বৃহস্পতিবার(১৫ ফেব্রুয়ারি)দুপুর এক টার দিকে মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর শুরু করে দুপুর আড়াইটার দিকে মরদেহ হস্তান্তর শেষ করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। গত ৫ই জানুয়ারি ঢাকার কমলাপুরগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে গোপীবাগ এলাকায় আগুন দেয়। এতে দগ্ধ হয়ে নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়। মরদেহ অতিরিক্ত দগ্ধ হাওয়ায় পরিবারের স্বজনরা কেউ তাদেরকে সনাক্ত করতে পারেনি। পরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের পরিচয় এর চেষ্টা করা হয়। ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)ফেরদাউস আহমেদ বিশ্বাস জানান, গত ৫ জানুয়ারি ঢাকা কমলাপুরগামী বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে গোপীবাগ এলাকায় নাশকতা কারীরা আগুন দেয়। এতে দগ্ধ হয়ে নারীসহ চারজের মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত দগ্ধ হাওয়ার কারনে পরিবারের স্বজনরা তাদেরকে কাউকে সনাক্ত করতে না পারলে।পরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। তিনি আরো জানান,প্রায় এক মাস দশ দিন পর ডিএনএ টেস্টের নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের পরিচয় জানা যায়।পরে পরিবারের সদস্যদেরকে সংবাদ দিলে আজ দুপুরের দিকে এলিনা ইয়াসমিনের মরদেহ তার স্বামী সাজ্জাদ হোসেন চপল বুঝে নেয়। নাতাশা জেসমিন নেকির (দুলাভাই)মোঃ এহতেশাম নেওয়াজ মরদেহ বুঝে নেয়।চন্দ্রিমা চৌধুরী সুমির মরদেহ বড় ভাই দীপঙ্কর চৌধুরী বুঝে নেয়। ও আবু তালহার মামা মোঃ মনিরুল ইসলাম মরদেহ বুঝি নেয়। নিহত তালহার মামা মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার ভাগিনা সৈয়দপুরের নীলফামারীর বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ছিল, সৈয়দপুর যাওয়ার জন্য ফরিদপুর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ঢাকায় এসে সৈয়দপুর যাওয়ার কথা ছিল।আমরা টিভি খবরের দেখতে পাই বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনা ঘটে। পরে আমরা এসে ট্রেনে খবর নিয়ে জানতে পারি এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তিনি আরো জানান,আমার ভাগিনার গ্রামে বাড়ি,রাজবাড়ী জেলার কালুখালী থানার গাংবথুন্দিয়া গ্রামের আব্দুল হকের সন্তান নিহত এক ভাই দুই বোন সে ছিল মেজ। আমার ভাগিনার মরদহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। দগ্ধে নিহত নাতাশা জেসমিন নেকি দুলাভাই এহতেশাম নেওয়াজ জানান,মাত্র ১১ মাস আগে বিয়ে হয় নাতাশার।সে পুরান ঢাকার ওয়ারী একাডেমীয়া ইংলিশ স্কুলে শিক্ষকতা করতো।তাঁর শ্বশুর বাড়ি ফরিদপুর স্বামী আসিফ খানসহ ঢাকায় আসার পথে এই ঘটনাটি ঘটে, তার স্বামীরও ৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল সে এখন ভালো আছে। তিনি আরো জানান,আমরা তার মরদেহ পুরান ঢাকায় নিয়ে জানালা শেষে কবরস্থানে দাফন করা হবে। নিহত চন্দ্রিমা চৌধুরী সুমির মরদেহ তার বড় ভাই দীপঙ্কর চৌধুরী বুঝে নেন, তিনি জানান,আমার ছোট বোন এশিয়াপ্যাসিভিক ইউনিভার্সিটি মাস্টার্স শেষ করেছিল।আমার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ওই ট্রেনে এই দুর্ঘটনার শিকার হন। পরে আমরা খবর পেয়ে ডি এন এর মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়।বর্তমানে ঢাকার ফার্মগেটের ইন্দারা রোড এলাকায় থাকতো। আমাদের গ্রামের বাড়ি,রাজবাড়ীর সদর জেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চিত্তরঞ্জন চৌধুরীর সন্তান।আমরা এক ভাই এক বোন সে ছিল ছোট। আমরা মরদেহ যা করার জন্য রাজবাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি। নিহত এলিনা ইয়াসমিনের মরদেহ তার স্বামী সৈয়দ হোসেন সাজ্জাদ চপল বুঝে নেন।তিনি জানান,আমার এক আত্মীয় কুলখানি অনুষ্ঠান শেষ করে পরিবারের সবাই গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে এই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় আমাদের পরিবারের আরো কয়েকজন দগ্ধ ছিল তারা চিকিৎসা নিয়েছে এখন তারা সুস্থ আর ঘটনাস্থলে আমার স্ত্রী প্রাণ হারান। তিনি আরো জানান,আমার একমাত্র পুত্র সন্তান সৈয়দ আরফানের বয়স ছয়মাস ওই ঘটনায় ছিল আল্লাহর কৃপায় আমার ছেলে বেঁচে যায়।আমার ছেলে অসুস্থ হার্ড ফুটো হয়ে গেছে চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়ায়র পাসপোর্ট রেডি হওয়ার কারণে আমি আমার স্ত্রীকে দ্রুত ঢাকায় আসতে বলি। ঢাকায় আসার পথে এই ঘটনাটি ঘটে, এখনো ঠিকভাবে মায়ের মুখ চিনতে পারে না তার আগেই চলে গেল আমার স্ত্রী। ছেলে বড় হলে তাকে কি বুঝাবো আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছিনা।এই বলে অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আমাদের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি সদর জেলার লক্ষী- কান্দা গ্রামে সাইদুর রহমানের কন্যা সন্তান। বর্তমানে,খিলক্ষেত ৬০ফিট এলাকায় থাকতেন।আমার স্ত্রীর মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে জানাজার পর দাফন সম্পন্ন করা হবে
Discussion about this post