আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরাক ও সিরিয়া ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া বা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি তেহরান। ধারণা করা হচ্ছে, এসব হামলার কারণে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেসব খতিয়ে দেখছে তারা। তবে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে, তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস বাহিনীসহ ৮৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এসব স্থান ইরানের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কুদস ফোর্স ইরান সমর্থিত কোনো আধাসামরিক গোষ্ঠী নয়, এটি সরাসরি ইরানি সেনাবাহিনীর একটি অফিসিয়াল শাখা। তাই এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে বলছে যে, তারা ইরাক ও সিরিয়ায় বা ওই সীমান্তে ইরানি সেনাবাহিনীকে টার্গেট করেছে যা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ঘটনায় ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া হামলায় অংশ নেওয়া যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে হামলা চালিয়েছে এবং এটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলা যায়। কারণ অনেকদিন ধরেই এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো ইরানের সামরিক সম্পদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে তেহরান। সেন্টকমের দেওয়া বিবৃতি থেকে যুক্তরাষ্ট্র এটাও স্পষ্ট করছে যে, তারা ওই অঞ্চলের বিমানঘাঁটিগুলো ব্যবহার করেনি এবং আঞ্চলিক মিত্রদের নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করেই হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাইডেন বলেন, আমার নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হলো। আমাদের পছন্দমতো সময়ে ও জায়গায় এটি চলতে থাকবে। একাধিক বিমান হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরপাল্লার বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানায় তারা। গত রবিবার (২৮ জানুয়ারি) জর্ডানে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন সেনা নিহত হন। জর্ডানে ওই হামলার জন্য ইরান–সমর্থিত একটি সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলায় তিনজন নিহত ছাড়াও আহত হন আরও ২৫ জন সেনা সদস্য। ওই হামলার পর কঠোর প্রতিশোধের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পরদিনই দুই দেশে হামলা চালালো মার্কিন সামরিক বাহিনী।
Discussion about this post