ঢাকা: আজ পনেরো আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীকে নিরাপত্তার কঠোর বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে। সোমবার বিকেল থেকেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নিজস্ব তৎপরতা থাকলেও ঢাকা মহানগর পুলিশের নেতৃত্বেই গোটা রাজধানীর নিরাপত্তা সাজানো হয়েছে। এদিন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাজীবীর মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বলেই জননিরাপত্তাকে সর্বাগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। শোক দিবসের নিরাপত্তায় এলিট ফোর্স র্যাবও থাকবে বিশেষ কৌশলে। গোটা রাজধানীতে থাকছে র্যাবের টহল। তল্লাশি ও অনুসন্ধান চালাবে র্যাব সদস্যরা। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডিএমপি কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে প্রস্তুত ডিএমপি। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের নিরাপত্তা। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলা বা অন্য কোনো নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে এসব বিষয়কে মাথায় রেখে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ও বনানী কবরস্থান পুরো এলাকা থাকবে সিসিটিভির আওতায়, যা লাইভ মনিটরিং করা হবে। ধানমণ্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেককে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি চেকপোস্ট ও আর্চওয়ে গেটের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে সম্মানিত নগরবাসীকে কর্তব্যরত পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং বনানী কবরস্থানসহ জনসমাগম হওয়ার সম্ভাব্য স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সোয়াট, বম্ব ডিসপোজাল ও সাদা পোশাকেও মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। মেটাল ডিটেক্টর ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং বনানীর কবরস্থান সুইপিং করা হবে। ধানমণ্ডি ৩২ লেকে থাকবে নৌ পুলিশ ও নৌ বাহিনীর টহল বোট। যেকোনো পরিস্থিতিতে সরেজমিনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অস্থায়ী সাব কন্ট্রোল রুমে সিনিয়র অফিসাররা সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন। জাতীয় শোক দিবসে নিরাপত্তার স্বার্থে ধানমণ্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত হোটেল, গেস্ট হাউস এবং মেসগুলোতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া কোনো প্রকার ব্যাকপ্যাক বা টিফিন ক্যারিয়ার না নিয়ে আসার অনুরোধ করেন ডিএমপি কমিশনার। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে কমিশনার বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা যেমন এসবি, এটিইউ, এনএসআই, ডিজিএফআই কারও নিকট থেকে এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলা হুমকির কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। সবমিলিয়ে ঢাকা মহানগর জুড়ে জাতীয় শোক দিবসের যে কর্মসূচি থাকবে সেটি যাতে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের সঙ্গে উদযাপিত হয়, সেই ব্যাপারে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে মহানগরী জুড়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সোমবার ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে ডিএমপির সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানানা। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই এই বছর ১৫ আগস্টে অন্যান্য যে কোনো বছরের তুলনায় জমায়েত বেশি হবে। সেটা চিন্তা করেই নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। যেন অতিরিক্ত জমায়েতের কারণে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। শোক দিবসের শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর সাধারণ জনগণ শ্রদ্ধা জানাবেন। এটা বিবেচনা করে দুই স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post