ঢাকা: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় দলে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সম্মতির এই নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন সময় দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বিশেষ করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সহ বহিষ্কৃতদের আবার দলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণভবন সূত্র বলছে, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র বহিস্কৃত গাজীপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগে সম্মানিত পদ দেয়া হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, অতি সম্প্রতি জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা মেয়র জায়েদা খাতুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে গাজীপুরের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী জাহাঙ্গীর আলমকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে বললে, সে মোতাবেক জাহাঙ্গীর আলম ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করলে দলে ফেরার কার্যক্রম শুরু হয়। সারাদেশব্যাপী আলোচিত একাধিকবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত জাহাঙ্গীর আলমের দলে ফেরা নিয়ে যে গুঞ্জন চলছিল তা এখন সত্যি হলো। শনিবার মধ্য রাতে যোগাযোগ করা হলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার রাজনৈতিক আদর্শ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি দিয়ে গাজীপুর সিটির রাজনীতি এবং উন্নয়নকে আরো সমৃদ্ধ করবো। এদিকে জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের খবরে স্হানীয় নেতা কর্মীরা মধ্য রাতে তার ছয়দানা হারিকেনের বাসভবনে ছুটে আসেন শুভেচ্ছা জানাতে। গভীর রাত পর্যন্ত এই শুভেচ্ছা বিনিময়ে এসে নেতাকর্মীরা বলছেন, “আবারও সত্যের জয় হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম নির্দোষ”। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেছেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, এ জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যনিবার্হী সভায় দলের ঐক্যের ব্যাপারে ব্যাপক জোড় দেন এবং তিনি সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা এবং সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ফলে বহিষ্কৃত নেতারা যেমন নতুন উদ্যমে কাজ করার শক্তি পাবে তেমনি দলের বিভক্তি দূর হবে এবং সাংগঠনিক ভাবে দল আরও বেশি শক্তিশালী ও উজ্জীবিত হবে বলে আশা করছেন গণভবনের বৈঠকে অংশ নেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ উপস্থিত সকলে।
Discussion about this post