ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যে দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি তার অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ দিচ্ছি। বিরাট অংকের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, সেই ভর্তুকি দীর্ঘদিন দেওয়া সম্ভব না। কোনোভাবে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের অপচয় যেন না ঘটে। ইসলাম ধর্মে অপচয়ের ব্যাপারে না রয়েছে। সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে। আপনারা যখন মসজিদে নামাজ পড়বেন, তখন বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচগুলো বন্ধ করে রাখবেন। ওটা শুধু মসজিদের ক্ষেত্রে না, আপনাদের বাড়িতেও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন, এতে আপনাদের বিলও কম হবে, বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোমলমতি ছেলেদের বুঝাতে হবে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষ খুন করলে কখনও বেহেস্তে যাওয়া যায় না। মসজিদের ইমাম, আলেম, খতিবদের সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখে, আপনাদের কথার গুরুত্ব রয়েছে। মাদক, নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, অহেতুক মিথ্যা কথা বলে গুজব ছড়ানো, গৃহকর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ, দুর্নীতি ইত্যাদির বিষয়ে মসজিদের খুতবা দেওয়ার সময় যদি আপনারা বেশি করে বোঝান তাহলে কিন্তু মানুষ সেটা গ্রহণ করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় মসজিদ নির্মাণ করে করে ইসলাম ধর্ম প্রচারে সুযোগ করে দেব। আজকে আমরা ৫০টি মসজিদ উদ্বোধনের জন্য সমবেত হয়েছি, রমজান মাসে উদ্বোধন করতে পেরেছি, এজন্য সকলকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কিছু দোয়া করতে বলব, আমরা যেন আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ধর্মের প্রতি অত্যন্ত নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। ইসলাম ধর্মের বাণী যেন আমার দেশের মানুষ সঠিকভাবে জানতে পারে সেই ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন। মাদ্রাসা শিক্ষাকে অনেকে অবহেলার চোখে দেখতো কিন্তু এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম মাদ্রাসা শিক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হয়, কাজেই তাকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের জাতীয় শিক্ষা নীতিমালাতেও আমরা ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছি।’ তথ্যানুযায়ী, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় স্থাপন করতে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে গ্রহণ করে সরকার। ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ইতোমধ্যে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায় ও ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ১৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।
Discussion about this post