ঢাকা: আমরা দেখব কারা এসে নির্বাচন করতে বাধা দেয়, আমরা প্রস্তুত আছি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নিজেরা নির্বাচনে যাবে না, নির্বাচন করতেও দেবে না। আমরা দেখব কারা এসে নির্বাচন করতে বাধা দেয়। আমরা প্রস্তুত আছি।’ শনিবার রাজধানীর গুলিস্তানে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী ও সহযোগী সংগঠনের যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘জাতিসংঘের সহায়তা চাইতে পারে কিন্তু জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কোনো আইনে পড়ে না’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলন, ‘বিএনপির নালিশের রাজনীতির ধারা, তারা সেটা করেই যাবে।’ ‘আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার সঙ্গে পারবে না জেনেই বিএনপি যড়যন্ত্র করছে’ বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নিজেরা নির্বাচনে যাবে না, করতেও দেবে না। আমরা দেখব কারা এসে বাধা দেয়। আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের হাতিয়ার মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার। আমরা কোনো পরাজিত শক্তির কাছে হার মানব না।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেতা ছাড়া আন্দোলন হয় না, নেতা ছাড়া নির্বাচন হয় না।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারের বিবৃতি নিয়ে বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান বলছে সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্যই সরকার এ ধরনের মামলা করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে। আমি প্রথমে বলতে চাই, সরকার কিন্তু এখানে মামলা করেনি। মামলা সাধারণ একজন নাগরিকও করতে পারে। সরকার মামলা করেছে এটা সর্বাগ্রে মিথ্যা। আর ভয় দেখানোর কথা যে বলা হচ্ছে, কাকে ভয় দেখাব? যাকে ভয় দেখানোর কথা বলা হয়েছে তিনি এই দেশের মানুষকে ভয়ের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাজনীতিকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশের সংবিধানিক সরকারকে ভয় দেখিয়েছিলেন অসংবিধানিক সরকারের পক্ষে ওকালতি করে। তারপরও কি ওয়ান-ইলেভেন আমাদের মনে নেই? কে কাকে ভয় দেখায়। তিনি বিরাজনীতির ফায়সালা নিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করেছেন আমরা কি ভুলে গেছি?’ জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ইফতার পার্টি বন্ধ করা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ইফতার আয়োজন বাতিল করা হয়েছে জনগণের স্বার্থে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি যে আমাদের রাজনৈতিক জীবনের সংকট ঘনীভূত করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কী করব?’ শিরোনামের সংবাদ এই ষড়যন্ত্রটির একটি অংশ।’ ‘এই সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক এতে কোনো সন্দেহ নেই’ বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের। প্রথম আলোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ বলেন, ‘সাত বছরের একটি শিশুকে ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে বক্তব্য নেওয়া, সেটা কি সাংবাদিকতা। স্বাধীনতা দিবস তরুণ প্রজন্মের দেশাত্মবোধ সৃষ্টির এক অনন্য দিন। এই দিনে পলিটিক্যাল সিলেক্টটেড বিশেষ এক এজেন্ডা সেটিং এর উদ্দেশ্যে এই সংবাদটি প্রকাশ মহান স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার সামিল নয়?’ ‘স্বাধীনতা দিবসের দিনে দেশের অর্জন মর্যাদা নিয়ে তামাশা করা সাধারণ কোনো ভুল নয়’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই এটি অনৈতিক কাজই নয়, ফৌজদারি অপরাধ। দেশের একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেটা দেশের কোনো বিবেকবান মানুষের না বোঝার কথা নয়। প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশক কি দায় এড়াতে পারেন? তারা কি তাদের এই গৃহীত অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন? ক্ষমা চেয়েছেন? কোনোটাই করেননি। সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম আলো আর বিএনপি সাপ্লিমেন্ট করে একে অপরকে। টার্গেট শেখ হাসিনা, টার্গেট সরকার, টার্গেট জনগণ। টার্গেট আগামী নির্বাচন ভন্ডুল করা।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমাদের শত্রু নয়। কিন্তু প্রথম আলো আপনাদের সঙ্গে শত্রুতা করছে। বিএনপিকে আমরা ভাবি প্রতিপক্ষ, বিএনপি আমাদের ভাবে শত্রু। প্রথম আলো আমাদের শত্রু ভাবে। প্রত্যেকের সম্পাদকীয় পলিসি আছে।’ যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের র্শীষ নেতারা।
Discussion about this post