ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ ও মারধর করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) সভাপতি আশুতোষ সরকারকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এই দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সারোয়ার হোসেন ভূঞা। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) তিনি জানান, বুধবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ। এ সময় হারুন অর রশিদ ল’ রিপোটার্স ফোরামের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ডিবি প্রধান বলেন, গতকালের ঘটনায় তারা দুঃখিত। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত। ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য পুলিশ সচেষ্ট থাকবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ। টেলিফোনে আশুতোষ সরকারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়টি দেখা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। সাধারণ সম্পাদক আরও জানান,আলোচনায় সাংবাদিক নেতারা রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদকে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্যবহারে আরও সতর্ক থাকতে হবে। তারা বলেন-এডিসি হারুনের যে কোনো অপারেশনেই কাজ হচ্ছে সাংবাদিকদের হেনস্তা করা। তারা বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের মারপিট, হেনস্তা করার কথা উল্লেখ করে তাকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে এই কর্মকর্তাকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে গতকালের সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বুধবার সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণের সময় বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। নতুন করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবি তোলেন তারা। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রেই বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। এরপর আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরাও ভোটকেন্দ্রে ঢুকলে শুরু হয় হট্টগোল, এক পর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি। এ সময় শতাধিক পুলিশ ভোটকেন্দ্রে ঢুকে লাঠিপেটা শুরু করে। ভোটকেন্দ্রের বাইরেও আওয়ামী লীগপন্থী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে উত্তাপ ছড়ায়। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটার সময় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকা সাংবাদিকদের ওপরও চড়াও হয় পুলিশ। সাংবাদিকদের এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।
Discussion about this post