ঢাকা: খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন উল্লেখ করে এটা নিয়ে আওয়ামী লীগকে মাথা না ঘামাতে বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী তাঁতিদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার নাটক শুরু করেছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে এত দরদ উথলে উঠল কেন?’ ‘সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন যেখানেই থাকুক। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে।’ ‘নির্বাচনে না এলে বিএনপি আইসিইউতে যাবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি আইসিইউতে যাবে না আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ইতিমধ্যে আইসিইউতে চলে গেছে।’ ‘অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগ নিজে, সরকার নিজে। অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে এবার লাভ হবে না। সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে’- যোগ করেন ফখরুল। দেশ খাদের কিনারায় চলে আসছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ গ্যাস জ্বালানির দাম বেড়েছে সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই। তাদের দরকার শুধু টাকা।’ ‘বিদ্যুৎ আমদানি ক্যাপাসিটির নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি দুর্নীতি এমন পর্যাযে চলে গেছে কেউ বিনিয়োগ করছে না এজন্য দায় সরকারের।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি এ সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। ১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি বাম দলের লোক আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে। তারা বলছে, আওয়ামী লীগ খারাপের চেয়েও খারাপ।’ ‘সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এটিই একমাত্র লক্ষ্য (বিএনপির)’ বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিল না। সংকট সমাধানে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিল। যতবার ভোট চুরি করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কখনও ভোট চুরি করেনি। আওয়ামী লীগের লজ্জা হওয়া উচিৎ বিএনপির ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তারপর মামলা নিয়ে বাণিজ্য করে। পুলিশকে ব্যবহার করছে র্যাবকে ব্যবহার করছে। মার্কিনিরা নিষেধাজ্ঞা দেবে এটি নিয়ে রাজনীতি করবে এটি বিএনপি চায় না। পকেট ভারির স্বার্থে উন্নয়ন করছে সরকার। ঐক্যবদ্ধ থেকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আরও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, সে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে।’ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল-ডাল, তেল-লবনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে শুরু করেছি তখন থেকে তারা গুলি করে হত্যা করতে শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে-আন্দোলনকারীকে প্রকাশ্যে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এখনো আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। এই যে ভয়াবহ একটি দুর্বিষহ অবস্থা। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’ আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? ভয় একটাই সেটা আপনারা খুব ভালো করে জানেন। সেটা হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।’ সংগঠনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, জিএম সিরাজ, ওলামা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।
Discussion about this post