স্টাফ রিপোর্টার(সিলেট): সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা ও স্বনামধন্য ব্যক্তি আব্দুস ছাত্তার । মেন্দিবাগে তার নামে রয়েছে মার্কেট ‘ছাত্তার ম্যানশন’সহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ। প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও দুই সন্তান আব্দুস ছাত্তারকে রেখে চলে যান যুক্তরাজ্যে। প্রথম স্ত্রী যুক্তরাজ্যে থেকে কোনো খোঁজ নেননি স্বামীর, দুই সন্তান নেননি বাবার খবর। অবহেলায় নিঃসঙ্গ জীবনে ২০১০ সালে ১৬ জুলাই তাহমিনা বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী করে ঘরে তোলেন। তার ঔরসে এক ছেলে ও মেয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রী তাহমিনার কাঁধেই ভর করেন শেষ বয়সে। এ বছরের ২৬ মে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার আগে সম্পদ লিখে দিয়ে যান দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলের নামে। বাবার মৃত্যুর দুই দিন পর দেশে আসেন প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান আমজাদ হোসেন ও আরমান হোসেন। স্বামীর মৃত্যুর মাস দেড়েক পর দেশে ফিরেন প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুনও। কিন্তু মৃত্যুর আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানের নামে লিখে দিয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েন তারা। দেশে আসার পর সাবিহা খাতুন ও তার ছেলেরা সম্পদের দখল নিতে চেষ্টা চালান। তাহমিনা বেগমকে অপবাদ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাতে কাজ না হওয়ায় হুমকি দিতে থাকেন। অসহায় তাহমিনা বেগমও নিরাপত্তার খাতিরে সিলেট কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। অবশেষে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেন তাহমিনা বেগম। তাতে তুলে ধরেন নিজে ও সন্তানদের নিরাপত্তাহীনতা এবং প্রাণ সংহারের সংশয়ের কথা। সতিন ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক সম্পদ দখলে নেওয়র চেষ্টা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ করেছেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি আইনি সহায়তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার কথাও জানান। তাহমিনা বেগমের অভিযোগ, তার স্বামী নাবালক সন্তানের নামে ‘ছাত্তার ম্যানশন’ অছিয়ত নামামূলে রেজিস্ট্রিপূর্বক হস্তান্তর করে যান। কিন্তু তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও দুই ছেলে হুমকি-ধামকি দেওয়ার পাশাপাশি নানা মিথ্যাচার করছেন। যে কারণে দুই সন্তানসহ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তিনি। তাকে সৎ মা হিসেবে অস্বীকার এবং উদ্ভট, কাল্পলিক ও মানহানিকর বক্তব্য উপস্থাপন করছেন সতিনের সন্তানরা। তিনি আরও বলেন, পারিবারিক অশান্তির কারণে ২০১০ সালের ১৬ জুলাই আব্দুস ছাত্তারের সঙ্গে মুসলিম শরিয়াহ আইনে বিয়ে হয়। তার ঔরসে আফসানা আক্তার মাসিয়া ও আজহার হোসেন নামের দুই সন্তান রয়েছে। তার স্বামী আব্দুস ছত্তার দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্তের পর ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল তার নামীয় ছাত্তার ম্যানশনটি নাবালক ছেলে আজহার হোসেনের নামে রেজিস্ট্রি করা অছিয়ত নামামূলে হস্তান্তর করেন। নাবালক সন্তানের পক্ষে মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে তিনি স্থলাভিষিক্ত হন। অসুস্থ অবস্থায় তার স্বামীকে দেশ-বিদেশে চিকিৎসা করাতে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করা হয়। ২০২২ সালের ২৬ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কিন্তু তার মহাবিপদের সময় প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও সন্তান আমজাদ হোসেনসহ অন্য ছেলেমেয়েরা তার পাশে এসে দাঁড়াননি। কোনো ধরনের সহযোগিতাও করেননি। এখন তারা সম্পত্তি নিয়ে কাড়াকাড়ি ও মারামারি শুরু করেছেন। তাহমিনা বেগম বলেন, তার স্বামীর বেশ কিছু সম্পদ রয়েছে। তা এখনো ভাগবাটোয়ারা হয়নি। দ্বিতীয় স্ত্রী হলেও তিনি ও তার সন্তানরা এর অংশ আইনানুযায়ী পান। কিন্তু তা দাবি করছি না। বরং তার সন্তানকে দেওয়া সম্পদ তারা দখল করতে চাচ্ছেন। এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধি, আত্মীয়-স্বজনদের কারো কথা তারা শুনছেন না। তার বৈবাহিত জীবনকে অস্বীকার করে তারা গণমাধ্যমে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছেন। স্বামীর ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। এ বিষয়ে তাহমিনা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, আত্মীয় আখতার হোসেন, আব্দুল হান্নান শরীফ, কবির আহমদ দুলাল, কয়েছ আহমদ ও প্রতিবেশি সৈয়দ নুরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post