ঢাকা: রওশন এরশাদকে তার পদ থেকে সরানো বেআইনি উল্লেখ করে স্পিকার বরাবর পাল্টা চিঠি দেবেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা। সম্প্রতি শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে অব্যাহতি পাওয়া এই নেতা মঙ্গলবার চিঠিটি দেবেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরাতে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল স্পিকার বরাবর একটি চিঠি দেয়। তার বিপরীতে এবার চিঠি দেবেন রাঙ্গা। সোমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এই তিনি দাবি করেন, রওশন এরশাদকে অপসারণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি তিনি মঙ্গলবার লিখিতভাবে স্পিকারকে জানাবেন বলে উল্লেখ করেন। জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকের দিন তাকে এজেন্ডা জানানো হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। রাঙ্গা বলেন, ‘ওইটা (রওশনকে পদ থেকে সরাতে চিঠি) বেআইনি করেছে। তারা এটা আমার হাত দিয়ে করিয়েছে। আমি তখনো বলেছি বেআইনি হচ্ছে। তারা পরে এসে বলছে, চিঠিতে তিনটি সই দেওয়া আছে, সেগুলো সব রাঙ্গার সই। মিটিং ডাকছে রাঙ্গা, প্রিজাইড করছে রাঙ্গা, সই করছে রাঙ্গা। আমি বললাম, তাহলে এজেন্ডা কে দিল?’ জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক আরও বলেন, ‘এজেন্ডাটা চাইলাম, তারা সেটা দিলেন না। রেজ্যুলেশন লিখলেন তাদের লোক, আমাকে বললেন, সই করতে বলেছেন স্যার (জিএম কাদের), এখানে সই করেন। করে দিছি, স্পিকারের কাছে নিয়ে যেতে বললেন মুজিবুল হক চুন্নু, নিয়েও গেলাম। স্পিকারও বললেন, আর কয়েকটা মাস ছিল। এ কয়েকটা মাসের জন্য তাকে (রওশন এরশাদ) অপমান করবেন আপনারা? আমি বললাম, তাদের অপমান করার শখ হয়েছে তো তাই করলেন। স্পিকার বললেন, দেখি আমি আপার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবো।’ গত ৩০ আগস্ট হঠাৎই কাউন্সিল ডাকেন রওশন এরশাদ। যদিও জিএম কাদেরের দাবি, কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রওশন এরশাদের নেই। এরপর জিএম কাদেরের নির্দেশে গত ১ সেপ্টেম্বর রওশন এরশাদকে অপসারণে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেয় জাতীয় সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল। তবে চিঠি দেওয়ার পর ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিরোধীদলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা গণমাধ্যমে বলেন, তিনি রওশন এরশাদকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত ছিলেন না। এ কারণে রাঙ্গাকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাতীয় পার্টি। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গা দাবি করেন, রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। রাঙ্গা বলেন, আমি স্পিকারকে জানিয়েছি যে এটা নিয়ম মতো হয়নি। সবকিছুর তো একটা নিয়ম আছে। আমি স্পিকারকে লিখিত জানিয়ে দেব। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। কারণ এটার মধ্যে কোনো এজেন্ডা ছিল না। সাধারণত দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সেটি অনুমোদন করেন। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা এখন স্পিকারের হাতে। এখন শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটাই দেখার বিষয়।
Discussion about this post