ডেস্ক রিপোর্ট: জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোমিও খিশিদো। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের ভোটে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। দেশটিতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।এরপরেই তিনি চীনের প্রভাব মোকাবিলা ও জাপানের নাগরিকদের আয়ের বৈষম্য কমিয়ে আনতে জাতীয় সম্পদ পুর্নবণ্টনের অঙ্গীকার করেছেন। ওয়াশিংটনপোস্ট ও জাপানটাইমস এমন খবর দিয়েছে। পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনের পর আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী হবেন ৬৪ বছর বয়সী খিশিদো। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইশিহিদো সুগার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। জাপানের করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যর্থতার পর জনপ্রিয়তায় ধস নামায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুগা। এক বছরের মতো ক্ষমতায় থেকেছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিনজো অ্যাবের অধীন বহুবছর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন খিশিদো। মসৃণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তরের নিশ্চিয়তা দিয়েছেন তিনি। দলের তরুণ সদস্যদের মধ্যে হতাশা দেখা দেওয়ার পর অদ্ভুতভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা সুগার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলেন। খিশিদো বলেন, মানুষের প্রতিক্রিয়া তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং ক্ষমতাসীন উদার গণতান্ত্রিক পার্টির (এলডিপি) পুনর্জন্মে আস্থা অর্জনে কাজ করবেন। বুধবার সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি জানতে পেরেছি, দলের অনেকের কথায় সরকার কান দেওয়া হয়নি। তাদের কথা শোনা হয়নি। যে কারণে তারা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি।সুগার উত্তরসূরি হিসেবে তাকে মহামারির মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও অর্থনৈতিক অচলাবস্থা থেকে জাপানকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কিন্তু তার কাজের প্রথম সারিতে থাকছে, নভেম্বরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। ওই নির্বাচনে এলডিপি বিজয়ী হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এতে খিশিদোর প্রধানমন্ত্রীত্ব আরও পাকাপোক্ত হবে। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইউ উচিয়ামা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে খিশিদোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে–কীভাবে তিনি ভোটারদের কাছে পৌঁছাবেন। তবে পররাষ্ট্রনীতির দিক থেকে তিনি সুগা ও অ্যাবের নেওয়া পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে জাপান-মার্কিন জোট এবং অবাধ ও উন্মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর জোর দিতে হবে। এছাড়া চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় কোয়াডের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করায় মনোযোগ দিতে হবে। ওয়াশিংটনভিত্তিক র্যান্ড কর্পোরেশনের জাপানিজ নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ জেফ্রি হরনুং বলেন, নিরাপত্তার, কূটনীতির জায়গা থেকে আমার মনে হচ্ছে, জাপানের অনেক পরিবর্তন দেখতে যাচ্ছে আমরা। নির্বাচনী প্রচারের সময় খিশিদো বলেছিলেন, চীনকে মোকাবিলায় সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বেইজিংয়ের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসন নিয়ে তার ভিতরে গভীর বোধ কাজ করছে।
Discussion about this post