আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে আটক তরুণীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেছেন ইরানের পুলিশ প্রধান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাহশা আমিনিকে পুলিশ কর্মকর্তারা ভ্যানে তোলার পর তাকে মারধর করে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুলিশ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেন রাহিমি। মাহশা আমিনির পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন তিনি। তদন্তেও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মারধরে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, গত মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনি নামে এক তরুণীকে আটক করে ইরানের ‘মোরালিটি পুলিশ’। ওই তরুণীর বিরুদ্ধে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগ করে পুলিশ। ওই তরুণীকে আটকের পর তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি প্রাণ হারান। পুলিশের দাবি, ওই তরুণী হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারিয়েছেন। ওই তরুণীর প্রাণ হারানো মুহূর্তের একটি ভিডিও প্রকাশ করে নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে ইরান পুলিশ। যদিও ওই তরুণীর এক আত্মীয় দাবি করেন যে তার আগে হার্টের কোনো সমস্যা ছিল না। গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কুর্দিস্তানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষ হওয়ার পরে কিছু মানুষ চলে যায়, আর কিছু মানুষ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। তারপর তারা গর্ভনর অফিসের সামনে জড়ো হয়। সেখানেও তারা সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। তখন নিরাপত্তা রক্ষীরা টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। নিহত ওই তরুণীর সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ইরানের বিভিন্ন মানুষ সামাজিক মাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। দেশটির বিচারবিভাগ একটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব হওয়ার পর থেকে নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক। দেশটির মোরাল পুলিশ এই ড্রেস কোড কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ড্রেস কোডের নিয়ম বাস্তবায়নে বিভিন্ন মানুষ বিশেষত তরুণীদের সঙ্গে মোরাল পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডকে ঘিরে কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা অনেক সময় জোর করে নারীদেরকে পুলিশের গাড়িতে তোলে। ২০১৭ সালে কয়েক ডজন নারী জনসম্মুখে হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানান। তখন কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
Discussion about this post