ঢাকা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকার রাজারবাগে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। উদ্বোধনের সময় পুলিশের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোনো দলের পক্ষ নেওয়া যাবে না। নিজেদের রাজনৈতিক কর্মী ভাবা ও বিশেষ কোনো দলকে সুবিধা দেওয়া যাবে না।মনে রাখতে হবে, পেশিশক্তি কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ হয়েছে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সভাপতিত্ব করেন আইজিপি বাহারুল আলম।সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি গত কয়েক দিনে কিছুটা অবনতি হয়েছে। দুর্গাপূজা সামনে রেখে সারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। তাই সবাইকে সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। রাজবাড়ীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজবাড়ীর ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখছি।তদন্ত প্রতিবেদনের পর আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে পাঁচজনকে আমরা আইনের আওতায় এনেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর হয়তো আমরা সম্পূর্ণ ঘটনা জানতে পারব।’ডিসি ও এসপি দায়িত্বে থাকায় নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব হবে কি না—এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘কাদের গাফিলতি হয়েছে সেটা তদন্তের পরই বলা যাবে। আগে থেকে সরিয়ে দিলে তদন্তের গুরুত্ব নষ্ট হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মব প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ব্যর্থ হচ্ছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, আমরা ব্যর্থ হচ্ছি না। সমস্যা হচ্ছে অসহিষ্ণুতা। যারা এসব ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সবাইকে ধৈর্যশীল হতে হবে।’ এমন পরিস্থিতি নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণে প্রভাব ফেলবে কি না—জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। ভোটকেন্দ্রে যেতেও কেউ প্রতিহত করতে পারবে না।’অনুষ্ঠানে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে উপদেষ্ট বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের তোষামোদ করবেন না। আপনারা রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকবেন। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের সময় সামান্য ভুল পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট ও জনগণের আস্থা বিনষ্ট করতে যথেষ্ট।…আমরা চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে সর্বাধিক অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর।’অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ সম্পর্কে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ‘এটা শুধু আইনকানুন শেখানো নয়, প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে জানা যাবে, কিভাবে চাপের মধ্যেও নিরপেক্ষ থাকা যায়। কিভাবে সংঘাতের পরিবর্তে সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়া যায়। কিভাবে মানুষের আস্থা অর্জন ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা যায়।’অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কমান্ডারসহ দেড় শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
Discussion about this post