ঢাকা: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরাসরি না এলেও বিএনপি ঘোমটা পরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরাসরি না এলেও বিএনপি ঘোমটা পরে আসবে’। বলেন, এটা তাদের রাজনীতির আরেক ভণ্ডামি। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। আগামী ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদাহ ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক (ধানের শীষ) ছিল না, কিন্তু ঘোমটা পরে সব খানেই তাদের প্রার্থী ছিল। এই ঘোমটা পরা প্রার্থী কিন্তু সিটি নির্বাচনেও থাকবে। সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফ অলরেডি ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যান্য সিটিতেও ঘোমটা পরা তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।’ আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনে পরাজয় জেনে তারা নির্বাচনে আসতে চায় না। তারা যদি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে না আসে আওয়ামী লীগ তাদের আমন্ত্রণ করবে না। সিলেটের আরিফ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আসার জন্য প্রস্তুত। নির্বাচনে না আসা আসলে তাদের ভণ্ডামি। বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বলছে আওয়ামী লীগ নাকি ৩০টির বেশি সিট পাবে না। নির্বাচনে আসেন দেখা যাবে, কয়টি সিট পান। ২০০৮ সালে বিএনপির নেত্রী বলেছিল আওয়ামী লীগ ৩০ সিটও পাবে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি ৩০ সিট পেয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনে তাদের কপালে ৩০ সিট আছে বলেই তারা নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা মহল বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত দিবসগুলোকে অস্বীকার করে, পালন করে না, উপেক্ষা করে। এর মধ্যে ১৭ এপ্রিল একটি। এদিন দেখবেন বিএনপির কোন কর্মসূচি নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭ই মার্চ তারা পালন করে না। স্বাধীনতার পথে স্বাধীকার আন্দোলনে ৭ জুন গুরুত্বপূর্ণ। এদিনও তারা পালন করে না। এরা নাকি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী! দেখবেন তাদের বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু নেই। তাদের অনুষ্ঠানমালায় বঙ্গবন্ধু নেই। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার মহানায়ক নেই। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যা শুরু করে দিয়েছিল সেই ধারা বিএনপি এখনো অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি এমনটা করেছে এখনো তারাসেই ভাবধারা বহন করছে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় তারা বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক মাত্র। ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। স্বাধীনতার ঘোষণা অনেকেই পাঠ করেছেন। স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র বৈধ অধিকার ছিল বঙ্গবন্ধুর। সত্তরের নির্বাচনে জনগণ তাঁকে সেই ম্যান্ডেট দিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সুদীর্ঘ ও সুবিশাল ইতিহাস স্বাধীনতা সংগ্রামের। একটা বাঁশির ফুতে হয়নি। সেখানে বীরের বীরত্ব আছে, পাশাপাশি ষড়যন্ত্রও আছে। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসের ফুটনোট হতে পারে, তাকে নায়ক-মহানায়ক বানানো বিএনপির উদ্ভট কল্পনা, যার সঙ্গে বাস্তবের কোন মিল নেই। আজকে স্বাধীনতার আদর্শ ও চেতনা বিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশে বিস্তার করছে। এই বিষবৃক্ষ উৎপাটন পর্যন্ত আমাদের লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপির নেতৃত্বের অপরাজনীতিকে পরাজিত করতে হবে। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ নির্দিষ্ট জেলাসমুহের দলীয় নেতৃবৃন্দ ও সংসদ সদস্যরা।
Discussion about this post