হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে শনিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেননি। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে। এ কারণে চা বাগানগুলো অচল হয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা জানান, দাবি আদায় হলেই তারা কাজে যোগদান করবেন। ভরা মৌসুমে চা পাতা উত্তোলন বন্ধ থাকায় বাগান কর্তৃপক্ষ পড়েছেন বিরাট সমস্যায়। বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানালেও শ্রমিকরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। জানা গেছে, বর্তমানে চা বাগানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০টাকা। এ টাকায় শ্রমিকদের চলা কঠিন। তাই মজুরি বাড়ানোর দাবিতে চা বাগানগুলোতে শ্রমিকরা ৩দিনের কর্মবিরতি পালন শেষে এবার শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে যোগদান করে। এর আগে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) থেকে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টা হতে বেলা ১১টা পর্যন্ত শ্রমিকরা একযোগে পূর্ব ঘোষিত কর্মবিরতি পালন করেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে মাধবপুর, চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ, বাহুবল উপজেলায় রয়েছে পাহাড়ি এলাকা। এ পাহাড়ি এলাকাকে ঘিরে ছোট বড় মিলে ৪১টি চা বাগান গড়ে উঠেছে। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় ৩২ হাজার শ্রমিক চা পাতা উত্তোলনে জড়িত। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে চা-শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু দেশে এখনও চা শ্রমিকরা ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত। চা শ্রমিকদের জীবনমানের তেমন উন্নয়ন ঘটেনি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য চাহিদা এখনও পূরণ হয়নি। তিনি জানান, অবিলম্বে চা শ্রমিকদের চুক্তি নবায়ন, দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি, রেশন হিসাবে সাপ্তাহিক ৫ কেজি চালসহ দাবিগুলো মানতে হবে। চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দাবি আদায়ের কর্মসূচি চলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। দাবি আদায় না হওয়ায় নতুন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post