ঢাকা: কিছু অযৌক্তিক দাবি তুলে আন্দোলনের নামে প্রশাসনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছে আন্দোলনকারীরা। এসব কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, নির্বাচন হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে—না এর আগে, না পরে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণানুযায়ী, ডিসেম্বরের আগে নয় এবং জুনের পরেও নয়—এই সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শিগগিরই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিদিন নানা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রেণিপেশার মানুষ। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রশাসনসহ প্রায় সবখাতেই নানা দাবিতে আন্দোলন চলছে, যেন দীর্ঘ ১৬ বছরের জমে থাকা ক্ষোভ এখন প্রকাশ পাচ্ছে। সবশেষ, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ নিয়ে শুরু হওয়া উত্তেজনা অন্যান্য আন্দোলনকেও ছাপিয়ে যায়। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশে আন্দোলন স্থগিত হয়, তবুও দিনভর গুঞ্জন ছিল প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে। ওইদিন সন্ধ্যায় এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের পর এসব আলোচনা আরও জোরালো হয়। এই বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আন্দোলনকারীরা প্রধান উপদেষ্টাকে কার্যত জিম্মি করে রেখেছিল, ফলে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার চিন্তা করেছিলেন। তিনি আরও জানান, নির্বাচনের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করা হবে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, ব্যাংকিং খাত, এনবিআর এবং সামষ্টিক অর্থনীতির কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হবে। পাশাপাশি, জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার বিচারও দৃশ্যমান করা হবে বলে জানান তিনি। ড. সালেহউদ্দিন মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরলে অর্থনীতিও গতি পাবে। বর্তমানে সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। তবে তিনি আশাবাদী, অন্তর্বর্তী সরকার এই লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবে।
Discussion about this post