বিনোদন প্রতিবেদকঃ কাজী হায়াৎ পরিচালিত চরম ফ্লপ ছবি ‘জয় বাংলা’ দিয়ে ব্যর্থ নায়িকার তকমা পাওয়া চিত্রনায়িকা জাহারা মিতু নানান ভাবে সমালোচিত ও বিতর্কিত। এই ফ্লপ নায়িকা চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমনের সঙ্গে প্রেম করছেন বলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এর ওপর সম্প্রতি মিতু তার প্রেমিক পরিচালক শাহীন সুমনের স্ত্রীকে মা সম্বোধন করে নতুন করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। তার এই কথা বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ট্রল হচ্ছে। মাত্রই দুদিন আগে শাহীন সুমনের এক ফেসবুক পোস্টের কারণে নতুন করে আলোচনায় এসেছে এই প্রেমিক জুটির গোপন প্রেম। যদিও তাদের প্রেম এখন আর গোপন নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেলো প্রায় দেড় বছর ধরে জাহারা মিতু ও শাহীন সুমনের দুরন্ত প্রেমের উড়ন্ত খবর চলচ্চিত্রের আকাশে – বাতাসে ভাসছিল। শোনা যায়, ওই সময় টানা ১৩ ছবির ফ্লপ নায়ক বাপ্পি চৌধুরীর পর্দাপ্রেমিকা হিসেবে শাহীন সুমনের পরিচালনায় ‘কুস্তিগীর’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেন মিতু। ওই ছবিতে অভিনয় করার আগে এই নায়িকার প্রেমিকের খাতায় নাম ছিল বাপ্পি চৌধুরীর। কিন্তু কুস্তিগীর ছবির আউটডোর শুটিংয়ে গিয়ে মিতুর প্রেম রোম্যান্স এর হিসেব পাল্টে যায়। বাপ্পিকে ছেড়ে বাপ্পির ওস্তাদ শাহীন সুমনের সঙ্গে তিনি অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠেন। শোনা যায়, বাপ্পির আগে তরুণ ও সুদর্শন নাট্য নির্মাতা রাহাত মাহমুদের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করেছেন জাহারা মিতু। কিন্তু মিতুর উড়নচণ্ডী স্বভাবের কারণে তাদের সম্পর্ক টিকেনি। কিছুদিন আগে রাহাত মাহমুদ ছোটপর্দার এক নবাগতাকে বিয়ে করেছেন। এদিকে শাহীন সুমন গেলো ২০ জুন প্রেমিকা মিতু’র জন্মদিনে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন। কুস্তিগীর ছবির শুটিংয়ের একটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করে তাতে শাহীন সুমন লিখেছেন – শুভ জন্মদিন আমার নায়িকা। এমন পোস্ট দেখার পর নেটিজেনরা নিশ্চিত হয়ে গেছেন শাহীন সুমন এবং জাহারা মিতু সত্যি সত্যিই প্রেমের সম্পর্কে আছেন। আর প্রেমিকার জন্মদিনে তাকে আমার নায়িকার নামান্তরে প্রেমিকা হিসেবেই স্বীকৃতি দিলেন বলে সবাই মনে করছেন।
জানা যায়, শাহীন সুমনের মগবাজারের অফিসে প্রায়শঃ আড্ডা মারেন জাহারা মিতু। ওই সময়ে দীর্ঘ সময় ধরে গভীর রাত পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। তাদের এই গোপন অভিসারে শুরুতে বাপ্পি উপস্থিত থাকলেও ওস্তাদ শাহীনের সঙ্গে প্রেমিকার প্রণয় গড়ে ওঠার কারণে তিনি সেখানে যাওয়া বাদ দেন। আর এখন তো গুরু – শিষ্যের মাঝে সাপে নেউলে সম্পর্ক চলছে কুস্তিগীর ছবির টাকা শাহীন মেরে দেওয়ার কারণে। বাপ্পি তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে অভিযোগ করেছেন কুস্তিগীর ছবির প্রযোজককে লগ্নিকৃত টাকা ফেরত না দিয়ে ছবিটি নাকি শাহীন দুই জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। গেলো রোজার সময় এটা নিয়ে এফডিসিতে গুরু – শিষ্যের সঙ্গে চরম উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও নাকি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নয়াপ্রেমিক শাহীন সুমনের বাহুলগ্না হয়ে কলকাতায় যান জাহারা মিতু। সেখানে তারা পাঠান ছবিতে দেখতে গিয়ে কলকাতা নিউ মার্কেট এলাকায় বাংলাদেশী একজন সাংবাদিকের নজরে পরেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরপর গেলো সপ্তাহেও তারা দু’জন কলকাতায় যান। এবার তাদের সঙ্গী ছিলেন গেলো ঈদে মুক্তি পাওয়া ফ্লপ ছবি শত্রু’র প্রযোজক সুনীল ঘোষ শুভ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে তারা গিয়েছিলেন কলকাতার সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের জন্য। তবে ছবিটি নির্মাণ নিশ্চিত নয় বলে কলকাতার একটি সূত্রে জানা গেছে।
কয়দিন আগেই শাহীন সুমনের সঙ্গে প্রেমের বিষয়ে একটি গণমাধ্যমের ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয় জাহারা মিতুকে। তিনি উত্তরে বলেন, এমন মিথ্যা গুজব কারা ছড়ায়, কেনো ছড়ায় বোধগম্য নয়। তারা কোত্থেকে এমন তথ্য পায়, ভেবেই অবাক হই। ওই সাক্ষাৎকারের উপস্থাপক সাংবাদিক মিতুকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনারা দু’জনে নাকি কয়দিন আগে কলকাতাও গিয়েছিলেন। এর উত্তরে মিতু আরও অবাক হওয়ার প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, আমি শাহীন ভাইয়ের স্ত্রীকে মা বলে সম্বোধন করি, তার রান্না করা ভাত খাই। এমন গুজব কারা ছড়ায় ? জানা গেছে, প্রেমিক পরিচালক শাহীন সুমনের স্ত্রীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় মিতু পোস্ট করেন। ওই পোস্টে মিতু তাকে ভাবিমা বলে সম্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বর্তমান মহাসচিব শাহীন সুমন শুধু জাহারা মিতুর সঙ্গে অসম বয়সী প্রেম নিয়েই শুধু সমালোচিত নন। এফডিসির বকেয়া ত্রিশ লাখ টাকা ফেরত না দেওয়ার ঘটনায়ও চরম বিতর্কিত এখন। এফডিসি প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পুরনো তিনটি ছবি নির্মাণ বাবদ এফডিসি তার কাছে ত্রিশ লাখ টাকা পাওনা। মূলত এফডিসির কাছে ঋণখেলাপি হওয়ার কারণেই শাহীন সুমন পরিচালিত কোনো ছবিতে পরিচালক হিসেবে তার নাম যায় না। কারণ, এফডিসির আইনানুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি তার ছবির জন্যে অনাপত্তি পত্র পান না। যাই হোক, জাহারা মিতুর সঙ্গে প্রেম এবং এফডিসির বকেয়া ত্রিশ লাখ টাকার বিষয়ে শাহীন সুমন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
Discussion about this post