চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে রেলওয়ে কর্মকর্তা শফিউদ্দিনকে বাসায় ঢুকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফাঁসি হওয়া দুই ব্যক্তি হলেন মো. শিপন হাওলাদার (৩৫) ও নাইমুল ইসলাম (৪৩)। শিপন শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নন্দনসার এলাকার প্রয়াত ইউনুস হাওলাদারের ছেলে। আর নাইমুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর পূর্বপাড়া এলাকার প্রয়াত ঈদুন মিয়া সরকারের ছেলে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, শিপন ও নাইমুল দুই বন্ধু ছিলেন। গত সোমবার রাতে শেষ ইচ্ছা হিসেবে তারা নান রুটি ও গরুর মাংস খেতে চান। সেই অনুযায়ী তাদের তা খাওয়ানো হয়েছে। ফাঁসির আগে পরিবারের সদস্যরা এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ছিলেন শফিউদ্দিন। ২০০৩ সালের ১৪ জুন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রেলওয়ে কোয়ার্টারের সরকারি বাসায় ঢুকে গুলি করে ও কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর বোমা ফাটিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় নিহত শফিউদ্দিনের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নবেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা মামলায় দুই আসামি শিপন ও নাইমুলকে ফাঁসি, সাত আসামির যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের পর তাদের চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। শিপন হত্যাকাণ্ডের সময় চট্টগ্রামের খুলশীর দক্ষিণ আমবাগান এলাকায় ও নাইমুল চট্টগ্রামের লালখান বাজার ডোবারপাড় এলাকায় থাকতেন। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আসামিদের আপিল ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খারিজ হয়। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তারা। সেটিও খারিজ হয়ে যায়।
Discussion about this post