আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাগ্য নির্ধারণে দেশটির জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দীর্ঘ সময় ধরে মুলতবি থাকার পর স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় আবার শুরু হয়েছে। এর আগে শনিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদের অধিবেশন দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। তবে বিরোধী দল ও সরকারি সদস্যরা একটি বৈঠকে বসার কারণে পুনরায় তা শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়। দেশটির প্রভাবশালী ইংরেজি পত্রিকা দ্য ডন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খনের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি এ দিনের আলোচ্যসূচিতে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। তবে বিরোধীরা যখন তার বিরুদ্ধে একাট্টা, তখন ট্রেজারি বেঞ্চে খুব কম সদস্যই জাতীয় পরিষদে উপস্থিত রয়েছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও উপস্থিত নেই। সংসদের সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির জিও নিউজ জানিয়েছে, অধিবেশন দেরিতে শুরু হওয়ায় ইফতারের পর রাত ৮টার দিকে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। তারা আরও জানায়, অধিবেশন ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে এবং ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মন্ত্রীরা তাদের বক্তৃতা দীর্ঘ করার চেষ্টা করছেন। দেশটির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হামিদ মীর বলেন, ‘সংসদের অধিবেশন মুলতবি হওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি ভাষণ দিচ্ছিলেন। তার ভাষণ শেষ হওয়ার আগেই অধিবেশন স্থগিত করা হয়। বিরতির পর তিনি আবারও ভাষণ শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে কমপক্ষে তিন ঘণ্টা কথা বলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। ’ এদিকে, শনিবারই যাতে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত না হয় সেজন্য অধিবেশন দীর্ঘায়িত করার সরকারের পরিকল্পনার পাল্টা কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরীফের চেম্বারে পরামর্শক বৈঠক করেছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। সংসদের অধিবেশনের বিরতির সময় এই বৈঠক করেন তারা। পরে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা সংসদে শৃঙ্খলা বজায় এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে বক্তৃতা দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। হামিদ মীর বলেন, এ বিষয়ে আসাদ কায়সারের চেম্বারে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিদেরও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘উভয় পক্ষই সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে এবং বক্তৃতার সময় কেউ হস্তক্ষেপ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আজ রাত ৮টার পরে সংসদে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন শাহ মাহমুদ কুরেশি। এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাতে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত ডেপুটি স্পিকারের রায় প্রত্যাখ্যান করার পর জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতা শেহবাজ শরীফ দিনটিকে দেশের ইতিহাসে একটি ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে অভিহিত করেন। তার মতে, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের ভবিষ্যতকে ‘উজ্জ্বল’ করে তুলেছে। তিনি বিরোধী নেতৃত্বকে এই ভুল রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ধন্যবাদ জানান। জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে শেহবাজ বলেন, একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে সাংবিধানিকভাবে পরাজিত করে সংসদ আজ ইতিহাস লিখবে।
Discussion about this post