সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার এলাকায় বিকল হযে পড়া নৌযানে আটকা পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ রবিবার সকাল আটটটার দিকে তাদের উদ্ধার করে সিলেট ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজ সকাল সাড়ে আটটায় এ তথ্য জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যলযের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমদ। অধ্যাপক মনসুর জানান, সেনাবাহিনীর একটি দল আজ সকালে সুনামগঞ্জের ছাতকের ফেরিঘাট এলাকায় শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছায়। এরপর তাদের উদ্ধার করে সিলেট ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশে রওনা হয়। এর আগের এক বার্তায় জানা যায়, নৌযানে ভাসতে থাকা শিক্ষার্থীরা সবাই সুস্থ আছেন। জানা যায় ওই শিক্ষার্থীর সুনামগঞ্জে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে বন্যা হানা দেয় সুনামগঞ্জ, সিলেটসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে। তারা ফিরে আসার পথে তাদের বহনকারী নৌযানটির দুটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে বেলা আড়াইটার দিকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কপোতাক্ষ-অনির্বাণ ট্যুরিস্ট বোট নামের একটি নৌযানে করে শিক্ষার্থীদের সিলেটের উদ্দেশে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে দোয়ারাবাজার এলাকায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নৌযানটি অচল হয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শোয়াইব আহমেদ আটকে পড়া নৌযান থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানান, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। সঙ্গে প্রচণ্ড ঢেউ। এখানে যেকোনো খারাপ কিছুই ঘটে যেতে পারে। আমাদের উদ্ধারে যত দ্রুত সম্ভব সেনাবাহিনীর তৎপরতা দরকার।’ আটকে পড়া এই শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদ। অধ্যাপক মনসুর আইএসপিআর ও সুনামগঞ্জের ১১ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেটের রেসকিউ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকতরে সঙ্গে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইএসপিআর থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জায়েদ তাকে জানান, তাদের টিম অর্ধেক পথ থেকে ফিরে এসেছে। নদীতে তীব্র স্রোত, সঙ্গে অন্ধকার ও ভারী বর্ষণ। এতে দিক হারানোর আশঙ্কা তো রয়েছেই। অধ্যপক মনসুর জানান, রাতভর তিনি শিক্ষার্থী, সেনাবাহিনী ও পুলিম প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলেছেন। রাত আড়াইটায় তিনি জানতে পারেন, শিক্ষার্থরিা তখন দোয়ারাবাজারের কাছে কিছুটা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে। কিন্তু রাত সাড়ে তিনটায় লঞ্চটি সেখানে নোঙর করতে পারেনি। তারা ছাতকের দিকে যেতে থাকে। অধ্যাপক মনসুর জানান, ভোর পৌনে আটটায় সেনাবাহিনী জানায় তাদের উদ্ধারকারী দল রওণা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, তারা সবাই ভালো ও নিরাপদ আছে। তবে সেখানে অবিরাম বৃষ্টির হচ্ছে। নৌপথের যাত্রা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তারা সবার দোয়া কামনা করেন। অবশেষে সেনাবাহিনীর টিম ছাতকের কাছে ফেরিঘাট এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
Discussion about this post