রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও শতাধিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত মার্চ মাসের শুরু থেকেই এখানে ডায়রিয়া রোগীরা ভর্তি হতে শুরু হয়। মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোর বারান্দায় ডায়রিয়া রোগীদের রেখে চিকিৎসা চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডের সামনে বারান্দায় বিছানা পেতে ডায়রিয়া রোগীরা শুয়ে আছেন। রোগীরা জানান, ঈদের কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চাপ কমেছে। ওয়ার্ডে বেড ফাঁকা আছে। কিন্তু ডায়রিয়া রোগীদের বেড দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে মেঝেতেও ডায়রিয়া রোগীকে রাখা হচ্ছে না। ওয়ার্ডের বাইরে একেবারে বারান্দায় ডায়রিয়া রোগীদের রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত মার্চ মাস থেকে এখানে এক হাজার ৬৩৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন ১১৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় এখানে নতুন ৫৮ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হন। ওই ২৪ ঘণ্টায় ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫৭ জন। পানিশূন্যতা দূর করতে নতুন রোগীদের চারটি থেকে সাতটি পর্যন্ত স্যালাইন দিতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ১৬ তারিখে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ২০৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলেন। ২১ এপ্রিল রোগী কমে ১৩৭ জন হয়েছিল। কিন্তু ২৩ এপ্রিলেই রোগী বেড়ে ১৭৮ জন হয়। ২৬ এপ্রিল ভর্তি ছিলেন ১৪৭ জন। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগী মাসুম আলী (২৬) জানান, গত মঙ্গলবার রাত ২টায় তিনি ভর্তি হয়েছেন। এ পর্যন্ত ছয়টি স্যালাইন দিতে হয়েছে তাকে। সকাল থেকে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। নাসিমা বেগম (৪০) নামের এক রোগীর স্বজন জানান, বুধবার সন্ধ্যায় নাসিমাকে ভর্তি করা হয়েছে। স্যালাইনের স্ট্যান্ড ধরে একটু পর পর তাকে টয়লেটে নিয়ে যেতে হয়েছে। রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মাহাবুবুর রহমান বাদশা জানান, তীব্র গরমে দ্রুতই খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইফতারের সময় সেই খাবার খাওয়ার কারণে ডায়রিয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে আবার তৃষ্ণা মেটাতে বাইরে বিক্রি করা আখের রস বা বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করছেন। এসব কারণে অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে হাসপাতালে এলে তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মূলত তীব্র গরমের কারণেই ডায়রিয়া কমছে না। ডায়রিয়া রোগী বেশি হলেও চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স আছেন। রোগীরা বিনা মূল্যে স্যালাইনও পাচ্ছেন। এই ঈদেও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক-নার্স থাকবেন। ঈদের ছুটিতে অন্তত একদিন বহির্বিভাগ খুলে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।
Discussion about this post